শিলিগুড়ি: কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষের নামে এফআইআর শিলিগুড়ি পুলিশের। দুই বিজেপি নেতা সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে উত্তরকন্যা অভিযানে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।


এর মধ্যে ২টি অভিযোগ হয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি থানায়। শিলিগুড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হিংসা ছড়ানো, অশান্তি সৃষ্টি, ট্রাফিক গার্ড ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশকে নিগ্রহ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে কৈলাস, দিলীপ সহ বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে।


সোমবার বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে শিলিগুড়ি-ফুলবাড়ি এলাকা। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তির সময়ই ভাঙচুর হয় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র গাড়ি।


বিজেপি নেতার অভিযোগ, তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয়। কিন্তু কারা গাড়ি ভাঙচুর করল তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি কৈলাস। তাঁর গাড়ি ভাঙচুর নিয়ে এখনও পুলিশের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।


অন্যদিকে উত্তরকন্যা অভিযান চলাকালীন তাদের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি। তাদের আঙুল পুলিশের দিকে।


পুলিশকে পাঠানো মেডিকো লিগাল রিপোর্টে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, গুলির মতো কোনও বস্তু ছুটে এলে যে ধরনের আঘাতের চিহ্ন তৈরি হয়, নিহতের বুকের চারদিকে এবং তলপেটের উপরের অংশে সেরকমই ক্ষতচিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে।


পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় ছরার গুলি চলে বলে অভিযোগ অন্যান্য আহতদেরও। উত্তরকন্যা অভিযানে দলীয় কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগে আসরে নামে বিজেপি।


বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধে গতকালও ধুন্ধুমার বাঁধে শিলিগুড়িতে। মুখ্যমন্ত্রীর ফ্লেক্স পোড়াল বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা। শিলিগুড়িতে বিজেপি- তৃণমূল সংঘর্ষ বেঁধে যায়।


মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ির মহাত্মা গান্ধী মোড় অবরোধ করে বিজেপি যুব মোর্চার সমর্থকরা। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়।


আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর ফ্লেক্সে। বিক্ষোভের জেরে আটকে পড়ে একাধিক সরকারি বাস, পর্যটক বোঝাই গাড়ি। বিক্ষোভে আটকে পড়ে পুলিশের গাড়ি। অভিযোগ, মহিলা পুলিশ অফিসারকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন বিজেপি কর্মীরা।


বিক্ষোভের ঘটনায় ২০ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরও চলতে থাকে বিক্ষোভ! এরপরই তৃণমূল জেলা সভাপতির নেতৃত্বে এলাকায় পৌঁছন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা!


মুখ্যমন্ত্রীর ফ্লেক্স জ্বালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। পাল্টা বিজেপির ফ্লেক্স জ্বালিয়ে দেয় তৃণমূল কর্মীরা! দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি! কিছুক্ষণ পর এলাকা ছেড়ে চলে যান বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা!


ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল ও বিজেপি। দার্জিলিং জেলার তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, বিজেপি গুণ্ডামি করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। উল্টোদিকে রাজ্য বিজেপি সম্পাদক রথীন্দ্রনাথ বসু বলেন, মানুষ সব দেখছে, পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে, ২১-শে জবাব দেবে।


ঘটনার পর থেকে থমথমে গোটা এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী।