কলকাতা:  নজরে একুশের ভোট। আজ থেকে দুদিনের বঙ্গ সফর শুরু করলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। এই সফরে একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেবেন তিনি। দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করার পাশাপাশি, নির্বাচনের আগে রাজ্যের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মনোবল বাড়ালেন তিনি।


হেস্টিংসে জে পি নাড্ডাকে কালো পতাকা। নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ। এদিন হেস্টিংসে বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করতে আসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। নাড্ডা পৌঁছনো মাত্র তাঁকে কালো পতাকা দেখানো হয়। এরপর শুরু হয় বিক্ষোভ।


এদিন বেলা ১টা নাগাদ কলকাতায় আসেন নাড্ডা। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান দলীয় নেতা-কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মুকুল রায়। শহরে পৌঁছে একাধিক কর্মসূচিতে এক এক করে যোগ দেবেন নাড্ডা।


নাড্ডা প্রথমে পৌঁছে যান হেস্টিংসে। সেখানে বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করতে আসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। কিন্তু, নাড্ডা পৌঁছনো মাত্র তাঁকে কালো পতাকা দেখানো হয়। এরপর শুরু হয় বিক্ষোভ।


হেস্টিংসে অগ্রবাল ভবনে স্থিত দলীয় কার্যালয়ের মধ্য়ে গঠিত নতুন নির্বাচনী দফতরের উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনের পাশাপাশি, রাজ্যের ৯টি জেলায় দলীয় কার্যালয়ের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন তিনি। অংশ নেবেন দলের আর নয় অন্যায় কর্মসূচিতে।


এরপর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় ভবানীপুরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই দিনই ভবানীপুরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিজেপির ‘গৃহ সম্পর্ক’ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। ভবানীপুরে দলীয় এক কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারার কথা রয়েছে।


এরপর যাবেন কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে। পুজো সেরে চা-চক্রে যোগ দেবেন জে পি নাড্ডা। কথা বলবেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। এর আগে ২০১৭ সালে কলকাতা সফরে এসে ভবানীপুরে গিয়েছিলেন বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।


২০১১ ও ২০১৬ নির্বাচনে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। বিজেপির থেকে মাত্র ৩ হাজার ১৬৮ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে তৃণমূল।


ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে ছ’টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই প্রেক্ষাপটে বিধানসভা ভোটের আগে জে পি নাড্ডার ভবানীপুরে আসাটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।


আগামীকাল, নাড্ডা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্বাচনী ক্ষেত্র ডায়মন্ড হারবারে যাবেন। আগামীকাল ডায়মন্ড হারবারে দলীয় সভায় ভাষণ দেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। এছাড়া, রেডিও স্টেশনে যাবেন ও পরে রামকৃষ্ণ মিশনের আশ্রম দর্শন করবেন।


দুপুরে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলবেন নাড্ডা। এমনকি এক মৎস্যজীবীর বাড়িতে মধ্যহ্নভোজও সারবেন তিনি। এরপর বিকেলে ডায়মন্ড হারবারেই তাঁর সাংবাদিক বৈঠক করার কথা।


সংগঠনকে মজবুত করতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের ৫টি জোনে, পৃথক পৃথকভাবে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এবার দক্ষিণবঙ্গের চারটি জোনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন নাড্ডা। কলকাতা, রাঢ়বঙ্গ, মেদিনীপুর, নবদ্বীপ জোনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।


যদিও, নাড্ডার এই কর্মসূচি বিজেপির কোনও কাজে লাগবে না বলে দাবি তৃণমূলের। পঞ্চায়েত মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ওরা আসুক, অভিষেকের এলাকা এবং আমার বাড়িও, কতটা জনপ্রিয়তা রয়েছে দেখে যায়, এখান থেকে যে রিপোর্টটা যায় সেটা যে কতটা ভুল, তার প্রমাণ পাবেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে।


এক নজরে নাড্ডার সফরসূচি--




  • দুপুর ১২টা - কলকাতা পৌঁছবেন।

  • দুপুর ১টা - হেস্টিংসে নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধন।

  • দুপুর ১.৩০ টা - ৯ জেলায় নির্বাচনী কার্যালয়ের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন।

  • দুপুর ৩টে - ভবানীপুরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক।

  • বিকেল সাড়ে ৪টে - কালীঘাট মন্দির দর্শন।

  • বিকেল ৫টা - স্থানীয় ঝুপড়িবাসীদের সঙ্গে কথা বলবেন জে পি নাড্ডা।