জয়ন্ত রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : কোন হাসপাতালে থাকার সময় মৃত্যু হয়েছে রোগীর? এই প্রশ্নে ডেথ সার্টিফিকেট পেতে প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে নাজেহাল হতে হল মৃতের পরিবারকে। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রোগীর মৃত্যু হওয়ায় ডেথ সার্টিফিকেট দিতে টালবাহানার অভিযোগ দুই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এক হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার সময় অজ্ঞান হন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের বাসিন্দা তাপস প্রামাণিক। অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। আর তার জেরেই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হল তাঁর পরিবারকে। কে দেবে ডেথ সার্টিফিকেট, এই নিয়ে দুই হাসপাতালের মধ্যে তুঙ্গে উঠল টানাপোড়েন।  প্রায় ৬ ঘণ্টা পর মেলে মৃত্যুর শংসাপত্র।


মহেশতলা পুরসভার ৩৪ নম্বরে ওয়ার্ডের হেতালখালির বাসিন্দা তাপস প্রামাণিক। পরিবার সূত্রে খবর, চোখের ছানি অপারেশন করানোর জন্য এদিন সকালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বজবজের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সকাল দশটা নাগাদ ওটিতে নিয়ে যাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন রোগী। নিয়ে যাওয়া হয় বজবজ পুর হাসপাতাল। সেখানে তাপসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরিবারের অভিযোগ, এরপরই শুরু হয় দুর্ভোগ। কারণ, ডেথ সার্টিফিকেট দিতে রাজি হয়নি কোনও হাসপাতালই। পুরো বিষয়টি নিয়ে বজবজ পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য দীপক ঘোষ বলেছেন, 'এখানে ভর্তি ছিলেন না। ইমার্জেন্সিতে আনা হয় মৃত অবস্থায়। চক্ষু হাসপাতালে মর্গ না থাকায় মানবিকতার খাতিয়ে আমাদের মর্গে রাখা হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেট কেন দেব?'


ঠিক কীভাবে মৃত্যু হল রোগীর? কেন ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে টালবাহানা? এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও কথা বলতে চাননি বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর শতরূপা দাস। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে বিকেল ৪টে নাগাদ ডেথ সার্টিফিকেট দেয় বেসরকারি চক্ষু হাসপাতাল। সেখানে বলা হয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে রোগীর। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা ধরে যেরকম হেনস্থার মুখে পড়তে হল তাপস প্রামাণিকের পরিবারকে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।