দার্জিলিং: আশার আলোর মধ্যেই ফের কাঞ্জনজঙ্ঘা ঘিরে অশান্তির কালো মেঘ। একদিকে গুরুং অনুগামীদের বিক্ষোভ, অন্যদিকে সূত্রের খবর অনুযায়ী ভানু ভবনে অশান্তির ঘটনায় মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং, মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি এবং মোর্চা নেতা প্রকাশ গুরুংয়ের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করেছে সিআইডি।


শুক্রবার ভেস্তে গিয়েছে বিমল গুরুংয়ের ডাকা মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। দার্জিলিং-সিকিম সীমান্তের মাঝিটারে আচমকা হানা দিয়ে পুলিশ ১১ জন মোর্চা নেতা-কর্মীকে সিকিম থেকে গ্রেফতার করে। সূত্রের খবর, পুলিশি হানার সময় পালিয়ে যান গুরুং। মোর্চার দাবি, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সিকিমে ঢুকে গুলি চালিয়েছে। তাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম দাওয়া ভুটিয়া। তিনি কালিম্পংয়ের প্রাক্তন কাউন্সিলর দাওয়া লেপচার গাড়ির চালক।

অন্যদিকে, দক্ষিণ সিকিমের এসপি জানিয়েছেন, দুপুর আড়াইটে নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বাহিনী নামচি থানা এলাকায় ঢুকে অভিযান চালায়। তাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নামচি থানায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কালিম্পংয়ের পুলিশ সুপার ও বাহিনীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ৬ জনকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ আটক করেছিল। কিন্তু বৈধ পরোয়ানা না থাকায় তাদের নিয়ে যেতে দেয়নি সিকিম পুলিশ। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে এখনও কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার মোর্চার চিফ কো-অর্ডিনেটর বিনয় তামাঙ বনধ প্রত্যাহারের ঘোষণার পরই রাত থেকে পাল্টা পথে নামেন গুরুঙের অনুগামীরা। শুক্রবার সকালে পাহাড়ের জায়গায় বনধ চলবে এই হুঙ্কার ছেড়ে অবরোধ শুরু করে তারা। মোর্চার দাবি, বৃহস্পতিবার গুরুং অনুগামীদের বিক্ষোভে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠিচার্জে মৃত্যু হয় এক বিক্ষোভকারীর। শুক্রবার সকালে মৃতের দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান গুরুঙ্গ অনুগামীরা। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।

এরই মধ্যে দার্জিলিঙের সোনাদায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গুরুং অনুগামীরা। দার্জিলিঙের রংবুলেও একই ছবি। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ-স্লোগান। অগ্নিগর্ভ কার্শিয়ঙও। বৃহস্পতিবার রাতে এসডিপিও-র গাড়ি ভাঙচুরের পর এদিন সকালে কার্শিয়ং বাস স্ট্যান্ডে বিক্ষোভ দেখান গুরুং অনুগামীরা। কালিম্পঙেও অশান্তি ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে একাধিক গাড়ি-বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। বিনয়ের উত্থানে ভীত হয়েই কি মরিয়া গুরুং আত্মগোপন করে নিজের অনুগামীদের রাস্তায় নামিয়েছেন? একদিকে পুলিশি তৎপরতা অন্যদিকে দলের অন্দরে বিনয় তামাংয়ের থেকে চ্যালেঞ্জ, এই সাঁড়াশি চাপেই কি বেহাল গুরুং? কারণ, সূত্রের খবর পাহাড়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে নেপালের মাওবাদীদের যোগের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা।