কলকাতা: জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার আগে ফের গ্রেফতার শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা।১৫ জুনের তমলুকের একটি পুরনো মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গতকাল মানিকতলা থানার একটি মামলায় জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট। অন্য কোনও মামলায় গ্রেফতারের আগে জানাতে হবে আদালতকে, এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।
আজ মামলার শুনানি চলাকালীন রাখাল বেরার আইনজীবীরা আদালতে জানান, ‘রাখাল বেরাকে পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আদালত বলে যে, ‘যেখানে ডিভিশন বেঞ্চ মামলা শুনছে সেখানে গ্রেফতার দেখাতে এত তৎপরতা কেন ? কোন মামলার ভিত্তিতে গ্রেফতার, কোন পুলিশ অফিসার গ্রেফতার করেছে ?’
গ্রেফতারি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চায় আদালত। নির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি রাজ্যের আইনজীবী পি চিদম্বরম। কালকের মধ্যে বিস্তারিত তথ্য পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চাকরির টোপ দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে জুন মাসে গ্রেফতার করা হয় পেশায় ব্যবসায়ী রাখাল বেরাকে। সোমবার তাঁকে জামিন দেয় হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, আদালতের অনুমতি ছাড়া, গ্রেফতার করা যাবে না তাঁকে।
রাখাল বেরার বিরুদ্ধে সেচ দফতরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠায় জুন মাসে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু, পরিবারের অভিযোগ, বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায়, ফাঁসানো হয়েছে পেশায় ব্যবসায়ী রাখাল বেরাকে। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় অভিযুক্তের পরিবার। সেই মামলায় অভিযুক্ত রাখাল বেরাকে জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থা নির্দেশ দেন, অবিলম্বে ছেড়ে দিতে হবে রাখাল বেরাকে। পুলিশ প্রয়োজনবোধ করলে এফআইআর রুজু করতে পারে।কিন্তু আদালতের অনুমতি ছাড়া, গ্রেফতার করা যাবে না।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি, মানিকতলা থানায় রাখল বেরার নামে একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগ, সেচ দফতরের গ্রুপ-ডি পদে চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে, ২ লক্ষ টাকা ঘুষ নেন তিনি। তদন্তে নেমে ৫ই জুন রাতে, মানিকতলার আবাসন থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরিবার অভিযোগ করে, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হওয়াতেই ফাঁসানো হয়েছে রাখাল বেরাকে। আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। তারই প্রেক্ষিতে সোমবার ওই নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে কাঁথি আদালতে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে সরব হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা। পুলিশ তাঁকে আদালতে হাজির করলে স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবি জানিয়ে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় তাঁর উপর মামলা চলছে। রাখাল বেরার আইনজীবীর বক্তব্য তাঁর উপর মিথ্যা মামলা চাপানো হচ্ছে। সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই তিনি আদালতে এমন মন্তব্য করেছেন। এই ঘটনায় শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক চাপানউতোর।