কলকাতা: প্রতিহিংসামূলক আচরণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে শুভেন্দু অধিকারীর দেওয়া চিঠি পাওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের। গতকাল বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই রাজনৈতিক যড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে রাজ্যপালকে চিঠি দেন শুভেন্দু। মিথ্যে ফৌজদারি মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ তোলেন তিনি। শুভেন্দুর চিঠির পরই তৎপর হন রাজ্যপাল। চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে যথাযথ পদক্ষেপ করতে বলেন ধনকড়।

মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘পুলিশ-প্রশাসন যাতে শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত ফৌজদারি মামলা না করে, সেব্যাপারে হস্তক্ষেপে চেয়ে আমাকে চিঠি পাঠিয়েছেন শুভেন্দু। জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে, পদক্ষেপ নিন। আপনার একদা সহযোগীর এই আশঙ্কাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং আইনের শাসন বজায় রাখতে আত্মসমালোচনা এবং সংশোধন প্রয়োজন।’

এনিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণের সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক দলও।

বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সমস্ত পদ ছাড়ার আগে, বুধবারই বিধায়ক পদে ইস্তফা দেন শুভেন্দু। তারপরই রাজ্যপালকে চিঠি পাঠিয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে আপনার হস্তক্ষেপ চাইছি, যাতে আমার ও আমার অনুগামীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফৌজদারি মামলা রুজু থেকে পুলিশ-প্রশাসনকে নিরস্ত করা সম্ভব হয়।’

চিঠিতে শুভেন্দু আরও লেখেন, ‘কর্তব্য এবং জনসেবার কথা মাথায় রেখে আমি মন্ত্রিত্ব ছেড়েছি। কিন্তু মনে হচ্ছে, আমার রাজনৈতিক অবস্থান বদলের ফলে ক্ষমতাসীনরা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠতে পারে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে, পুলিশি দমনের নীতি নেওয়াটা বিপদ সঙ্কেত। ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং মানবাধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় প্রয়োজন পড়ে না।’

শুভেন্দুর এই আশঙ্কাকে হাতিয়ার করেই রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে চিঠিতে লিখেছেন, ‘বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ফৌজদারি মামলা শুধু অপরাধ বা অসাংবিধানিক নয়, এটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জাজনক। মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’

গত কয়েকদিন ধরেই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে চলেছেন রাজ্যপাল। এই চাপানউতোরে নতুন মাত্রা যোগ করল শুভেন্দু-ইস্যুতে তাঁর চিঠি।