পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: ফের তৃণমূল বনাম তৃণমূল। একনায়কতন্ত্র চালানোর অভিযোগ প্রধান ও উপ প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন তৃণমূলের সদস্যরাই! ঘটনাস্থল বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের গদারডিহি গ্রাম পঞ্চায়েত। এখানে আসন সংখ্যা ১২। সব আসনই তৃণমূলের দখলে। বৃহস্পতিবার অনাস্থা আনেন ৯ জন।
গদারডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হংসরাজ বাউড়ির দাবি, ‘প্রধান ও উপ প্রধান একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন। তাঁরা দলকে না জানিয়েই সব কাজ করছেন। এর ফলে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। সেই জন্য অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি।’
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েতের রাশ নিয়ে বড়জোড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এবং বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক আলোক মুখোপাধ্যায়ের বিবাদ দীর্ঘদনের। গদারডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান প্রাক্তন বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অন্যদিকে, অন্যান্য সদস্যরা বর্তমান বিধায়কের অনুগামী বলে পরিচিত। তার জেরেই অনাস্থা আনা হয়েছে বলে দাবি তৃণণূল সূত্রে।
পঞ্চায়েতের প্রধান রূপা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘এই পঞ্চায়েতের সদস্যরা ঠিকাদারদের নিয়ে রাজ করছেন। পরিষেবা না দেওয়ার কথা মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। ঠিকাদর ও সদস্যদের যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে অনাস্থা আনা হয়েছে।’
উপ প্রধান কৃষ্ণপদ ঘোষ বলেছেন, ‘এনআরজিএস-এর কাজে দুর্নীতি হচ্ছে। গদারডিহিতে নির্দিষ্ট কিছু ঠিকাদার চায়, তারাই কাজ করবে, বাইরের লোক কাজ করবে না। আমাদের মনে হয় এটা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। অলোক মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর লড়াই। আমরা কলকাতাতেও জানিয়েছি বিষয়টি।’
যদিও বর্তমান বিধায়কর দাবি, দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। প্রাক্তন বিধায়কেরও দাবি, তাঁদের মধ্যে কোনও লড়াই নেই।
এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। রাঢ়বঙ্গের বিজেপি আহ্বায়ক পার্থ কুণ্ডু বলেছেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল জোর খাটিয়ে নিজেরাই পঞ্চায়েত গঠন করেছিল। এবার ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। কাটমানির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে এই অনাস্থা।’
বাঁকুড়ার তৃণমূল জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা অবশ্য দাবি করেছেন, ‘বিরোধীরা যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বলছেন, সেটা ঠিক নয়। পঞ্চায়েত সদস্যদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, অভাব-অভিযোগ থাকতে পারে। আমরা সেটা মিটিয়ে নেব।’
তবে আস্থা-অনাস্থা নিয়ে মাথাব্যথা নেই এলাকাবাসীর। তাঁরা চান মিলুক সঠিক পরিষেবা।