কলকাতা: বিজেপির বিরুদ্ধে ত্রিমুখী লড়াইয়ের কৌশল তৃণমূলের। সংসদের ভেতরে-বাইরে সরব হতে নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার কালীঘাটে তৃণমূলের কোর কমিটির বর্ধিত বৈঠকে কীভাবে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান রুখতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। বিভেদের রাজনীতি বরদাস্ত নয়, বৈঠকে বার্তা দিয়ে বিজেপি ও গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দেন মমতা। পাশাপাশি, বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান তৃণমূলনেত্রী।

সূত্রের খবর, বৈঠকে মমতা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তার সমস্ত শক্তি দিয়ে বিজেপিকে প্রোমোট করছে। এর আগে কোনও সরকার এরকম করেনি। সরকারি নানা অনুষ্ঠানে রাখা হচ্ছে বিজেপির দলীয় চিহ্ন। ভেঙে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। বিভেদমূলক রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না। এর মোকাবিলায় নামতে হবে। শুধু বার্তাই নয়, কীভাবে গেরুয়া ব্রিগেডের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে হবে, এদিন তার কৌশলও বাতলে দেন মমতা। ৩ থেকে ১১ নভেম্বর রাজ্যের সব জেলায় গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে পথসভার নির্দেশের পাশাপাশি দলের তরফে প্রচার পুস্তিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তৃতীয়ত, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার নির্দেশ দেন মমতা। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৩ থেকে ১১ নভেম্বর সংহতির চেষ্টা বানচাল করার বিরুদ্ধে পথে নামবে দল। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সহ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। প্রতিবাদে আমরা সরব হব।

নভেম্বরে রাজ্যের ২টি লোকসভা ও একটি বিধানসভাকেন্দ্রে উপনির্বাচন। সেই নির্বাচনে আরও বেশি ভোটে জিততে হবে বলেও বৈঠকে বার্তা দেন মমতা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, রাজ্যে বাম এবং কংগ্রেসের ক্রমশ রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তৃণমূলের পর দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে কে উঠে আসবে, তা নিয়ে টানাটানি চলছে কংগ্রেস, বাম ও বিজেপির মধ্যে। অনেকে যেমন বাম, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাচ্ছেন, তেমনি অনেকে বিজেপির খাতাতেও নাম লেখাচ্ছেন। পাশাপাশি, গেরুয়া শিবিরের বাড়-বাড়ন্ত। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যে সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখতে এবং গেরুয়া ব্রিগেডের উত্থান রুখতে এখন থেকেই কোমর বাঁধছে তৃণমূল।