কলকাতা: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও প্রস্তাবিত এনআরসি-র প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। পথে নেমেছেন ছাত্র ও যুব সমাজ। মিটিং মিছিল করছে বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল। পশ্চিমবঙ্গও এর ব্যতিক্রম নয়। এরইমধ্যে রাস্তায় নেমে পড়েন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।কলকাতা সহ রাজ্যের নানান জায়গায় একের পর এক মিছিল করে দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), এনআরসি, এনপিআর বিরোধী আন্দোলনে একেবারে প্রথম সারির মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও বাম ও কংগ্রেসও এই ইস্যুতে পথে নেমেছে।এবিপি আনন্দ-সিএনএক্সের যৌথ সমীক্ষার ফলাফল অনুসারে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে অন্যান্যদের টেক্কা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মমতার আন্দোলন সমর্থন করেন?’ এই প্রশ্নের উত্তরে ৫৯ শতাংশ মতদাতাই বলেছেন ‘হ্যাঁ’। ‘না’ বলেছেন ৪০ শতাংশ। ‘জানি না বলতে বা বলতে পারব না’ বলেছেন ১ শতাংশ।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভ, আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এ রাজ্যে কী প্রভাব পড়তে চলেছে, তার আঁচ পেতেই এই জনমত সমীক্ষা করা হয়। গত ৮-৯ জানুয়ারি ২১৩৪ জনকে নিয়ে যৌথ সমীক্ষা চালিয়েছে এবিপি আনন্দ-সিএনএক্স।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক লাভ তৃণমূলের ঘরে উঠবে বলেই এই জনমত সমীক্ষায় ইঙ্গিত মিলেছে। ‘বাংলায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ইস্যুর রাজনৈতিক লাভ পাবে কোন দল?’সমীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তরে মতদাতাদের ৫১ শতাংশই জানিয়েছেন তৃণমূল। ৪৩ শতাংশ মনে করছেন লাভবান হবে বিজেপি। আর বাম –কংগ্রেস লাভবান হবে এমন মনে করছেন ৫ শতাংশ। ‘জানি না বা বলতে পারব না’ বলেছেন ১ শতাংশ।
এবিপি আনন্দ-সিএনএক্সের যৌথ সমীক্ষার ফলাফল অনুসারে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে। ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলনের জেরে কি অস্বস্তিতে মোদি সরকার?’ এই প্রশ্নের উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন ৭১ শতাংশ, ‘না’ বলেছেন ২৮ শতাংশ মতদাতা। ১ শতাংশ বলেছেন জানি বা বলতে পারব না’।
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলন তীব্র হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবারই বলেছিলেন, প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাড়াতে এনআরসি প্রক্রিয়া চালু করা হবে। কিন্তু নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিজেপির এক জনসভায় মোদি দাবি করেন, ২০১৪-তে তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে এনআরসি নিয়ে সরকার কোনও আলোচনাই করেনি।
এ ব্যাপারে জনমত সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়, ‘দেশজোড়া আন্দোলনের জেরেই কি এনআরসি নিয়ে অবস্থান বদল করলেন মোদি-শাহ?’ এই প্রশ্নের উত্তরে মতদাতাদের ৫৯ শতাংশই বলেছেন ‘হ্যাঁ’, ‘না’ বলেছেন ২৫ শতাংশ। ‘জানি না বা বলতে পারব না’ মন্তব্য ১৬ শতাংশ মতদাতার।