কলকাতা: লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ থেকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ। বেসরকারি ক্ষেত্রে ‘স্বাস্থ্যের অসুখ’ সারাতে বিপুল ক্ষমতা পেতে চলেছে, প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন! বেসরকারি হাসপাতালের মর্জিমাফিক কাজকর্মে লাগাম পরাতে, শুক্রবারই বিধানসভায় নয়া বিল পেশ করতে চলেছে সরকার।
নবান্ন সূত্রে খবর, এই বিলেই উল্লেখ থাকবে, স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন গঠনের কথা। নবান্ন সূত্রে খবর, বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতি কিম্বা সংশ্লিষ্ট কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হলে, ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিতে পারবে এই কমিশন। এমনকি তারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করতে পারবে!
অভিযোগ পাওয়া মাত্রই, এই কমিশন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালাতে পারবে। পুরনো ‘ক্লিনিক্যাল এসটাবলিশমেন্ট অ্যাক্টে’ এই সংস্থান ছিল না। প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী,
অভিযুক্ত বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাকে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানোর ক্ষমতা থাকছে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের হাতে। পাশাপাশি, কমিশন যদি মনে করে, ফৌজদারি অপরাধ হয়েছে, সেক্ষেত্রে, থানায় অভিযোগ জানাবে কমিশন। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করবে পুলিশ।
নবান্ন সূত্রে দাবি, স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের মাথায় থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অথবা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার। কমিশনের সদস্য হিসেবে থাকবেন, একাধিক চিকিৎসক ও চিকিৎসা জগতের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ব্যক্তি।
বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিলের জন্য এই কমিশন এমসিআই-এর কাছে সুপারিশ করতে পারবে।
বেসরকারি হাসপাতালে, ওষুধের বিল নিয়েও সাধারণ মানুষের ভুরিভুরি অভিযোগ। নবান্ন সূত্রে খবর, নতুন বিলে বলা হতে পারে,কোনও বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, নিজস্ব ফার্মেসি থেকে, রোগীর পরিজনদের ওষুধ কিনতে বাধ্য করতে পারবে না। রোগীর আত্মীয়রা যেখান থেকে খুশি ওষুধ কিনে আনতে পারবেন। বেড ভাড়া, আইসিইউ, টেস্ট-সহ সমস্ত ধরনের খরচ, বেসরকারি হাসপাতালের একাধিক জায়গায় ভাল করে ডিসপ্লে করতে হবে।
প্রশাসন সূত্রে দাবি, সরকারি জমি নিয়ে হাসপাতাল চালু করেছে, কলকাতায় এমন সংস্থার সংখ্যা ১০-১২। অভিযোগ, অধিকাংশ জায়গাতেই চুক্তির শর্ত মেনে দুঃস্থ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হয় না। নবান্ন সূত্রে খবর, নয়া বিলে, এই লিজ চুক্তি বাতিল করার ক্ষমতা থাকবে রাজ্য সরকারের হাতে।
লিজের শর্ত অনুযায়ী, যাঁদের বার্ষিক আয়, ৬ হাজার টাকার কম, তাঁরা এই ধরনের হাসপাতালের আউটডোরে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। আয়ের এই অঙ্কের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা শুরু করেছে সরকার।
একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের জন্য একাধিক রক্ষাকবচ। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে, তা কড়া হাতে মোকাবিলা করা হবে, এমনটাই সরকারের বার্তা।