ভোট-পরবর্তী হিংসায় জখম এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হল কলকাতার হাসপাতালে। ঘটনাস্থল নানুর। ভোটের ফল ঘোষণার পরের দিন, ৩ মে রানিনগর গ্রামে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন ২ তৃণমূল কর্মী। তাঁদের মধ্যে শ্যামল দাস নামে এক কর্মীকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সঙ্কটজনক অবস্থায়। গতকাল রাতে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী শ্যামল দাসের।
একদিকে নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বিধান মাঝির অভিযোগ, ভোটে হেরে আক্রোশবশত বিজেপি ওই তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
অন্যদিকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে নানুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী তারকেশ্বর সাহার অভিযোগ, ভোটের ফল ঘোষণার পরের দিন রানিনগর গ্রাম লুঠ করতে যায় তৃণমূল। গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলায় সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় হামলাকারীদের ছাড় দিয়ে উল্টে তাঁদের কর্মীদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে বিজেপির অভিযোগ।
ভোট গ্রহণ ঘিরে নানুরে একাধিক অশান্তির খবর মিলেছে। ভোটের দিন সকালে নানুর বিধানসভার বাহিরী এলাকায় বিজেপি পোলিং এজেন্ট সুকান্ত লোহারের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নথি ছেঁড়া ও বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
গত ২৯ এপ্রিল শেষ দফার ভোট মিটতেই ব্যাপক বোমাবাজি হয় নানুরের বন্দর গ্রামে। ভোট শেষ হওয়ার পরও দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতে থাকে। এমনকি নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরেওঅশান্তি চলছিল নানুরে।
এরপর ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি পরিদর্শনে বীরভূমে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা। নানুর বিধানসভা এলাকা পরিদর্শন করে চার সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল। স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, শেষ দফায় বীরভূমের ১১টা আসনে ভোট হয়, সেগুলি হল, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, বোলপুর, নানুর, লাভপুর, রামপুরহাট, ময়ূরেশ্বর, মুরারই, নলহাটি ও হাসন।
নানুর বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিধানচন্দ্র মাঝি। অন্য দিকে, বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারক সাহা। বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) হয়ে লড়েন সিপিআইএমের শ্যামলী প্রধান। শেষ বিচারে ৬৬৭০ ভোটে জয় হয়েছে বিধানচন্দ্র মাঝি।