আকাঙ্খা শর্মাকে খুন করে, কংক্রিটে কবর দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি উদয়ন দাস। টাকার জন্য মৃত প্রেমিকার শরীর থেকে গয়না খুলে, তা বিক্রিও করে সে! বাঁকুড়ায় বসে জেরার মুখে উদয়ন এমনটাই স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি।
তদন্তকারীদের দাবি, জেরার মুখে উদয়ন কবুল করেছে,
প্রেমিকা আকাঙ্খাকে খুনের পর তাঁর গা থেকে গয়না খুলে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে সে। মা ইন্দ্রাণীকে খুনের পর তাঁর গয়নাও ভোপালের সোনার দোকানে বিক্রি করে।
কিন্তু, উদয়নের এত টাকার প্রয়োজন ছিল কেন?
পুলিশ সূত্রে দাবি, পড়াশোনা কিংবা চাকরি না হলেও উদয়নের বিলাসবহুল জীবনযাপনের শখ কম ছিল না।
ভোপালে সে একটি মার্সিডিজ, একটি হন্ডা সিটি এবং একটি বাইক কেনে।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের দাবি, উদয়নের পাসপোর্ট দেখে জানা গিয়েছে, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালে সে তিনবার বিদেশে যায়।
২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর, ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি ভিয়েতনাম এবং ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল মস্কো গিয়েছিলেন।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিদেশ সফর শুরুর ঠিক আগে, ২০১০ সালে মা-বাবাকে খুনের কথা কবুল করেছে উদয়ন। পুলিশ সূত্রে দাবি,
বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য উদয়নের দরকার ছিল প্রচুর টাকা।
সেই টাকা জোগাড়ের জন্যই কি নিজের মাকে খুন করে তাঁর গয়না বিক্রি করে উদয়ন? তাতেও যথেষ্ট টাকা না মেলার জন্যই কি নথি জাল করে মায়ের পেনশন তোলে?
সেটা এখনও স্পষ্ট না হলেও, এটা বোঝা গিয়েছে, দু’হাতে খরচ করার ফলে উদয়নের অ্যাকাউন্ট সম্প্রতি ফাঁকা হয়ে এসেছিল। পুলিশ সূত্রে দাবি,
ভোপালের ফ্ল্যাটে উদয়নের একটি পাসবুক পাওয়া গিয়েছে, যাতে পড়ে আছে মাত্র ৯০ টাকা।
এই প্রেক্ষিতে পুলিশের প্রশ্ন, নিজের শখ আহ্লাদ পূরণের জন্যই কি আকাঙ্খাকে খুনের পর তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতায় উদয়ন? প্রেমিকাকে খুনের পর তাঁর গয়না বিক্রি করে?
তবে সব গয়না খুলে নিলেও, আকাঙ্খার গলার হারটি সে খোলেনি। সেটি দেখেই বোনের দেহ সনাক্ত করেন আকাঙ্খার দাদা।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, যে আমেরিকার প্রতি উদয়নের প্রবল মোহ ছিল, যেখানে সে আকাঙ্খাকে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, সেখানে সে নিজে কখনও যায়নি। তবে ভাঁওতা দেওয়ার জন্য পাসপোর্টে আমেরিকার নকল স্ট্যাম্প মেরে রেখেছিল।