শিলিগুড়ি: সোমবার সংসদে পেশ হওয়া কেন্দ্রীয় বাজেটকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় বাজেটকে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘ভেকধারী সরকারের ফেকধারী বাজেট।’ তাঁর দাবি, ‘হয়তো নোটবন্দির মতো ব্যাঙ্কবন্দি করে দেবে।’


শিলিগুড়ি থেকে ভার্চুয়ালি সেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বাজেটকে কৃষক, মানুষদের বিপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ফের দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়বে। পেট্রোপণ্যে কৃষি সেস বসিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। সেসের টাকা রাজ্য পায় না, সব টাকা কেন্দ্র নিয়ে চলে যায়।


এরপরই তাঁর কটাক্ষ, ভেকধারী সরকারের ফেকধারী বাজেট। মমতার প্রশ্ন, ‘বিমার টাকা পাবেন তো? তিনি যোগ করেন, হয়তো নোটবন্দির মতো ব্যাঙ্কবন্দি করে দেবে। বিমা কোম্পানিগুলি কাকে বিক্রি করবে, কেউ জানে না।’


মমতা বলেন, ‘১৫ লক্ষ দেবে না, উল্টে সবার কাছ থেকে ১৫ লক্ষ কাটবে। সব বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্র। পরিযায়ীদের দেশে ফেরত আসবে ট্রেন ভাড়ার ১ টাকাও দেয়নি কেন্দ্র।


তাঁর দাবি, ‘গরিবের টাকা মকুব নয়, কিন্তু পুঁজিপতিদের টাকা মকুব করা হচ্ছে। দেশে ১ জন বা ২ জন লোক বিজেপির অর্থভাণ্ডার। চা শ্রমিকদেরও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কেন্দ্র।


মমতা বলেন, রেল, বিমান, বন্দর, বিমা কোম্পানি সব বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্র। এবার বিজেপিকে টাকা দিয়ে বিক্রি করে দাও।


তাঁর কটাক্ষ, কৃষক, মানুষদের বিপক্ষে এই বাজেট। অসংগঠিত ক্ষেত্রের কোনও কিচ্ছু নেই বাজেটে। এরকম প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার আগে কখনও দেখিনি। দেশকে বিক্রি করছে, অথচ এক দেশ এক রেশনের কথা বলছে।


নজরে পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন ভোট। সেই কথা মাথায় রেখে বাজেটে রাজ্যের ওপর বিশেষ নজর কেন্দ্রের। ৬৭৫ কিমি সড়ক তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে আগামী অর্থবর্ষে। এর জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ। বাজেটে ঘোষণা নির্মলা সীতারমণের।


সোমবার সংসদে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘৬৭৫ কিমি সড়ক পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হবে। কলকাতা-শিলিগুড়ির রাস্তা সংস্কারও এর মধ্যে আছে। পশ্চিমবঙ্গের জন্য সড়ক তৈরিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ।


সড়কের পাশাপাশি, রাজ্যে রেল পরিকাঠামো নিয়েও পরিকল্পনা করা হয়েছে। সীতারমণ জানান, রেলের জন্য জাতীয় রেল প্ল্যান তৈরি হয়েছে। খড়গপুর থেকে বিজয়ওয়াড়া ফ্রেট করিডর তৈরি হবে।


এদিন সেই বিষয়টিকেও আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, ‘নতুন করে আবার শিলিগুড়িতে কি করবে? নতুন করে করিডোর করেছে রাজ্য। অসমে রিজিওনাল কানেক্টিভিটি, বাংলা কি হ্যাংলা? তোমরা না চালালে আমি চালিয়ে দেব। অসমে প্লেন চললে, বাংলায় কেন চলবে না ? যারা জানে না, তারা শুধু ভাঁওতা দেয়।’


মমতা বলেন, বাংলায় রাস্তা বানানোর দরকার নেই, কৃষকদের টাকা দাও।