সমীরণ পাল,উত্তর ২৪ পরগনা: নিউ নর্মাল পরিস্থিতির সঙ্গে মানুষ বেশ অনেকদিন ধরেই অভ্যস্ত ৷ কিন্তু আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না ৷ কোভিড পরিস্থিতি থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের চিন্তা ভাবনা । শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই এখন মানসিক অবসাদে ভুগছে । করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমেছে কিন্তু আতঙ্ক এতটুকুও কমেনি ।
কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উত্তর ২৪ পরগনাতেও সবসময়েই অনেকটা বেশি ৷ এই জেলার উত্তর দমদম পুরো এলাকায় প্রচুর মানুষই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন । যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের পাশাপাশি যারা আক্রান্ত হননি তাদের মধ্যেও আতঙ্ক রয়েছে । অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন । স্কুল চালু হয়নি ৷ এখনও পড়ুয়ারা স্কুলে যেতে পারছে না ৷ অনলাইন ক্লাস-ই তাদের লেখাপড়ার একমাত্র মাধ্যম । এই পরিস্থিতিতে উত্তর দমদম বিধানসভার সিপিআইএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের উদ্যোগে একটি অভিনব কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছিল সম্প্রতি ।
কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য, এটাই ছিল কর্মশালার বিষয়। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সহযোগিতায় উত্তর দমদম পৌরসভার প্রেক্ষাগৃহে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় । কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন উত্তর দমদম পুরো এলাকার সব বয়সের মানুষ । যারা চোখের সামনে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু দেখেছেন তাদের মনে আতঙ্ক পিছু ছাড়েনি। এই পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য কিভাবে এলাকার মানুষ ঠিক রাখবেন তাই ছিল কর্মশালার বিষয়ে । স্কুলে ক্লাসরুম নেই, নেই স্কুলের মাঠে খেলা এই পরিস্থিতিতে শিশুরা মানসিক অবসাদ কী ভাবে কাটাবেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এই কর্মশালায়। যারা চাকরি বা কাজ হারিয়েছেন, সেই সমস্ত বয়স্ক মানুষ আতঙ্ক ছাড়িয়ে কী করে সুস্থ জীবনে ফিরবেন তারও পরামর্শ দেন মনোবিদরা।
কর্মশালার এক উপদেষ্টা মেঘনা নন্দী জানান, এই পরিস্থিতিতে সকলকে মানসিকভাবে সাহায্য করার জন্যই এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে । ভয়-ভীতি আতঙ্ক ছাড়িয়ে কি করে নিউ নর্মালে সাধারণ মানুষ জীবন যাপন করবেন তারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এখানে । করোনা পরিস্থিতিতে উত্তর দমদম বিধানসভা এলাকায় করোনা আক্রান্তদের সাহায্যের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন সিপিআইএম বিধায়ক । নিউ নর্মালে এলাকার মানুষ যাতে মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন, তার জন্যই তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান । তিনি আরও জানান শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে সুস্থ থাকাটাও জরুরি সেই কারণে এলাকার মানুষদের নিয়ে এই ধরনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে । সকলের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছতে এখনও অনেকটা সময় বাকি, তার আগে এই ধরণের কর্মশালা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে জানিয়েছেন এলাকার বিদ্বজ্জনেরা। যেহেতু কোভিড পরিস্থিতি চলছে সেই কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই প্রেক্ষাগৃহে ৫০জন এলাকার বাসিন্দারাই এদিন উপস্থিত ছিলেন ৷