পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: করোনা আবহে বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ার টেরাকোটা শিল্পীদের পাশে দাঁড়াল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। মহামারীর মধ্যে শিল্পসম্ভার বিপণনের উদ্দেশে আয়োজিত হয়েছে বিশেষ অনলাইন কর্মশালা। সেখানে আয়োজকরাই কিনে নেবেন পোড়া মাটির ভাস্কর্য। কারোনাকালে বাজার হারানো শিল্পীরা তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে।


বাংলার গর্ব পোড়া মাটির ভাস্কর্য। রাঢ়বঙ্গের বাঁকুড়া জেলা বিখ্যাত তার অসাধারণ টেরাকোটা শিল্পের জন্য। বিষ্ণুপুরের মন্দিরের পাশাপাশি এই শিল্পকে অন্য মাত্রা দিয়েছে তালডাংরার টেরাকোটা গ্রাম পাঁচমুড়া ৷ কিন্তু করোনাকালে সঙ্কটে পড়েছে শিল্প আর শিল্পীদের এই গ্রাম। মারণ ভাইরাসের দাপটে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ। তাতে রীতিমতো অভাবের মুখ দেখেছেন শিল্পীরা। আধুনিক ভারতীয় ভাস্কর্যকলার অগ্রপথিক রামকিঙ্করের জেলায় বেচাকেনা হারিয়ে মন্দারোগে ভুগছে টেরাকোটা শিল্প। 


এই পরিস্থিতিতে পাঁচমুড়ার পাঁচ প্রসিদ্ধ মৃৎশিল্পীকে নিয়ে অনলাইন কর্মশালার আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত ওই কর্মশালা চলবে ১৬ জুন পর্যন্ত। দশ দিনের কর্মশালায় অনলাইনে নিজেদের শিল্পসম্ভার তুলে ধরছেন। এর পাশাপাশি তা নিশ্চিত ভাবে বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন শিল্পীরা। ওই এলাকার মৃৎশিল্পী ভূতনাথ কুম্ভকার বলেন, ১০ দিনের এই কর্মশালায় উৎপাদিত দ্রব্য আয়োজকরা কিনে নেবেন। একই সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমাদের বিশেষ 'সাম্মানিক' দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। পাঁচমুড়ার আরেক মৃৎশিল্পী শিবু কুম্ভকার বলেন, আমরা খুব খুশি। তবে আশা করব আরও বেশি শিল্পী যাতে সুযোগ পান। কেন্দ্রের পাশাপাশি টেরাকোটা শিল্পীদের সহায়তায় তৎপর রাজ্য সরকার।


অভাব থাকলেও শিল্পের রসদে এখনও জীবনীশক্তি ধরে রেখেছেন পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পীরা। সরকারি সাহায্য তাতে সঞ্জীবনী সুধার কাজ করবে, সেকথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী বলেন, পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পীদের উৎপাদিত সামগ্রী যাতে অনলাইনে বিক্রির সুযোগ তৈরি করা যায় তা দেখা হচ্ছে। এবিষয়ে তালডাংরার বিডিও-র সাথে কথা বলব।