মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: কাঁকসার গোপালপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল। স্থানীয়দের অভিযোগ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ইচ্ছামতো নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং তাঁদেরকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও স্থানীয়রা ভ্যাকসিন পাননি বলে জানাচ্ছেন।
ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবাক উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। ভ্যাকসিন গ্রহীতারা জানাচ্ছেন অনলাইনে বুকিং করেও দুর্গাপুরের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভ্যাকসিন নিতে এসে সমস্যায় পড়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ গনেশ মণ্ডল স্থানীয়দের না জানিয়েই তালিকা বানিয়েছেন। আর বেছে বেছে তাঁদেরকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। ফলে অনেকেই সময় মতো টিকা পাচ্ছেন না বরং হয়রানির শিকার হচ্ছেন তাঁরা।
এই অভিযোগেই বৃহস্পতিবার দফায় দফায় বিক্ষোভ ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ। খানিক্ষণের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কাঁকসা থানার পুলিশ বাহিনী। রাজ্যজুড়ে ভ্যাকসিন হয়রানি অব্যাহত। শহর থেকে শহরতলি একাধিক হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
গতকাল একই কারণে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল বাঁকুড়ায়। বুধবার ভোর থেকে ভ্যাকসিনের লম্বা লাইন পড়েছিল বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের কাঞ্চনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এলাকায়। বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন ব্লকের মানুষ আসছেন ভ্যাকসিনের জন্য। ভ্যাকসিন নিতে আসা সাধারণ মানুষের দাবি, তাঁরা নিজেদের এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভ্যাকসিন না পাওয়ার কারণে কাঞ্চনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন। ভ্যাকসিন নিতে সেই কারণে লম্বা লাইন দাঁড়িয়ে তাঁদেরকে ভ্যাকসিন নিতে হচ্ছে। এমনই একজন হলেন পেশা গাড়িচালক মহম্মদ মামুনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গাড়ি নিয়ে আমাকে বিভিন্ন জায়গায়া যেতে হয়। সে কারণে আমার এলাকায় আমি ভ্যাকসিন নিতে যাই। তাঁর অভিযোগ, বাঁকুড়ার এক নম্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু-তিনদিন লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও কিন্তু ভ্যাকসিন পাননি তিনি। সেই কারণে কাঞ্চনপুর এসে সকাল থেকে লাইন দেওয়ার পর ভ্যাকসিন নেন। সবমিলিয়ে ভ্যাকসিন দুর্ভোগ কবে কাটবে? কবে সবাই ভ্যাকসিন পাবেন? সেই প্রশ্নই এখন মাথাচাড়া দিচ্ছে।
অন্যদিকে ভ্যাকসিন হয়রানির ছবি মল্লারপুরেও। করোনা ভ্যাকসিনের ডাবল ডোজ নেওয়ার পর কেটে গিয়েছে বেশ কিছুদিন। মল্লারপুরের সোজ গ্রামের ২০ জন বাসিন্দা এখনও কোনও এসএমএস অথবা সার্টিফিকেট পাননি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, এপ্রিলে প্রথম ও ১৩ জুলাই দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরেও কিছুই মেলেনি। ফলে চিকিত্সা অথবা অন্য প্রয়োজনে ভিনরাজ্যে যেতে হলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সমস্যা, দ্রুত সমাধান করা হবে, আশ্বাস রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের।