জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আবারও মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী রইল দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সেই জেলার ডায়মন্ড হারবার থানা এলাকার ঘটনা। 


বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকার সন্দেহে এক গৃহবধূকে ন্যাড়া করে কালি মাখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবার থানা এলাকার চৌষা গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, চৌষা গ্রামের ওই গৃহবধূ প্রতিবেশী এক যুবকরে সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সোমবার ওই গৃহবধূকে তাঁর প্রেমিক বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় বলেও দাবি। এরপরেই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা গৃহবধূকে ধরে তাঁর মাথা ন্যাড়া করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী সেই সঙ্গে কালিও মাখিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনটাই জানা যাচ্ছে পুলিশ সূত্রে। 


পরে ঘটনার খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। তাঁরাই ওই নির্যাতিতা গৃহবধূকে উদ্ধার করেন। ঘটনায় ইতিমধ্যেই ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ।


একবিংশ শতকে পৌঁছেও বারবার একই ধরণের ঘটনার সাক্ষী থাকছে সাধারণ মানুষ। কোথাও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকার সন্দেহে অত্যাচার করা হচ্ছে তো কোথাও আবার চোর সন্দেহে একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে। কয়েকদিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনারই ক্যানিংয়ে এক মহিলার মাথায় জল ঢেলে ব্লেড দিয়ে চুল কেটে দেওয়ার ছবি ধরা পড়েছিল ক্যামেরায়। সেখানেও কারণ একই ছিল।  প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকার সন্দেহ আর তার জেরেই এমন মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী ছিল ক্যানিং।


এছাড়াও কিছুদিন আগেই স্থানীয় স্কুলঘরের চাবি চুরি করেছে সন্দেহে এক পরিবারকে সামাজিক বয়কটের নিদান দেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছিল। বীরভূমের ঘটনায় কেউ যদি ওই পরিবারের সঙ্গে কথাও বলত, তাঁদেরও একঘরে করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকী সালিশি সভায় এমন নিদান দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন গ্রামের মোড়ল সুনীল হাঁসদা। যদিও তিনি বলেছিলেন, সিদ্ধান্ত তাঁর একার নয়। সকলের মিলিত সিদ্ধান্তে তিনি কেবল সায় দিয়েছিলেন।