কলকাতা ও কাঁথি: কাঁথিতে শক্তি প্রদর্শনের সমাবেশ। সেখানেই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথম কর্মসূচিতে টার্গেট ‘টু হান্ড্রেডের’ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, এবার বিজেপি ২০০ পার।
উল্টোদিকে শুভেন্দুর গড় কাঁথি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে বসে আত্মবিশ্বাসী সুর তৃণমূল নেত্রীর গলায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি সরল সাধা-সিধে, দিনের শেষে আমিই জিতব।’
বুধবারই অধিকারীদের গড় কাঁথিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে বিশ্বাসঘাতক বলে আক্রমণ করেছিলেন সৌগত রায়। মীরজাফর বলেও কটাক্ষ করেন। কাঁথিতে ভিড়ে ঠাসা কর্মসূচির মধ্যমণি শুভেন্দু তার জবাব দিলেন চাঁচাছোলা ভাষায়! বললেন, ৭৭-এ ব্যারাকপুরে উনি তো কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন, ইন্দিরা গাঁধীর ছবি ব্যবহার করেছিলেন, তারপর একদিন বদলে গেলেন। ১৯৯৮-তে মমতার বিরুদ্ধে লড়েছিলেন কংগ্রেসের টিকিটে। ১৯৯৮-তে গডসের অনুগামীদের হাত ধরতে হয়েছিল।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদ থেকেই ইস্তফা দেন শুভেন্দু। ২০০৭ সালে যে নন্দীগ্রাম তাঁর রাজনৈতিক উত্থানের অনুঘটক বলে ধরা হয়। তা নিয়েই বুধবার কাঁথিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে বেইমান বলে আক্রমণ করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বলেন, তাঁদের সঙ্গে এত বড় প্রতারণা করলে? আন্দোলন করেছিল শেখ সুপিয়ানরা, আর তোমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে নেতা বানিয়েছিল আর শুভেন্দু অমিত শাহের পা যেদিন ধরল, আমার মনে হল, এই দিন দেখার চেয়ে মৃত্যু হওয়া ভাল ছিল। লজ্জা লাগে, যখন তাঁকে আমার সহকর্মী বলতে হয়।
কাঁথির কুরুক্ষেত্র থেকে তীক্ষ্ণ ভাষায় তার জবাব ফিরিয়ে দেন ‘ঘরের ছেলে’ শুভেন্দু। বলেন, উনি তো কলকাতাকে মিনি পাকিস্তান বলেছিলেন, আমরা ভারতীয়দের পাকিস্তানি বলি না, ঘরের ছেলেকে বিশ্বাসঘাতক বললে মানুষ তো বেরোবেই।
গত ১৯ ডিসেম্বর রাজ্য-রাজনীতিতে কার্যত ঝড় তুলে বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূলের দু’বারের সাংসদ ও ২ বারের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এরপর বুধবার শুভেন্দুর ‘ঘরের মাঠ’ কাঁথি-তে শক্তি প্রদর্শন করে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার তার পাল্টা কর্মসূচি নেন শুভেন্দু। গেরুয়া পতাকার ভিড় নিয়ে পদযাত্রার সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিকারী পরিবারের মেজ ছেলে। কাঁথির মেচেদা বাইপাস থেকে কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার লম্বা রোড-শো করেন শুভেন্দু। এরপর সেখানেই জনসভা করেন।
শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে ঔদ্ধত্যের প্রকাশ বলে তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূলও। বলেন, শুভেন্দুর অবস্থা খুব খারাপ, ওর ঔদ্ধত্য ওর ব্যবহার এই সবের মধ্যে এলাকার মানুষ একটা পাথর চাপা অবস্থায় ছিল, আর ও কিছু রিকভার করতে পারবে না।
পাল্টা জবাব দিয়েছেন শুভেন্দুও। বলেন, "ওনার প্রচারে আমি গিয়েছি, আমার প্রচারে ওনাকে প্রয়োজন হয়নি, নীতির কথা সৌগত রায়ের মুখে মানায় না।"