কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: ভোটের মুখে প্রাথমিকে ১৫ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ হতে চলেছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সূত্রের খবর, বুধবার থেকে হবে কাউন্সেলিং। ভোটের আগেই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘুষ দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছে তৃণমূল, অভিযোগ বিরোধীদের। 


প্রকাশিত মেরিট লিস্ট পর্ষদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে-- www.wbbpe.org ও http://wbbprimaryeducation.org। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পর্ষদ। সেই অনুযায়ী, মোট সাড়ে ১৬ হাজার খালি পদের মধ্যে ১৫,২৮৪টি এই মেরিট-লিস্ট অনুযায়ী ভরাট করা হবে। বাকি ১,২১৬টি শূন্যপদ বণ্টন হবে যাঁরা অনলাইনে আবেদন করেছেন অথচ নাম এই মেরিট তালিকায় ওঠেনি এবং কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশানুসারে যাঁরা অফলাইনে আবেদন করেছেন। 




এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও টেট পাশ করা আবেদনকারীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকার ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। একইভাবে এসএসসি-ও সাঁওতালি শিক্ষকদের বিষয়েও তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই দু’টি তালিকা ভোটের মুখে নয়। আমরা বহুদিন ধরেই শিক্ষা দফতর থেকে চেষ্টা করছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নেওয়ার পরেই মেধা তালিকার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।’


মঙ্গলবারই নিজেদের দাবিদাওয়া আদায়ে নজিরবিহীনভাবে আদিগঙ্গা পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করেন অনুমোদনহীন মাদ্রাসার শিক্ষকদের একাংশ। অনশন প্রত্যাহার করে নিলেও, সল্টলেকে লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন পার্শ্বশিক্ষকরা। এরই মধ্যে বিধানসভা ভোটের মুখে প্রাথমিক শিক্ষক পদে বড়সড় নিয়োগ হতে চলেছে। ভোটের মুখে ১৫ হাজারের বেশি প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করল রাজ্য সরকার।


সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ১৬ হাজার ৫০০ জন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা পরেই ১০ থেকে ১৭ জানুয়ারি চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ শুরু হয় রাজ্যজুড়ে। যে সমস্ত প্রার্থীরা ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ এবং পরবর্তীতে প্রশিক্ষণ নেন, তাঁদের কাছে আবেদনপত্র চাওয়া হয়। পর্ষদ সূত্রে খবর, প্রায় ২৬ হাজার ৫০০ জন আবেদন করেন। এনসিটিই-র বিধি মেনে যাঁরা প্রশিক্ষিত, তাঁদের নথি যাচাই করা হয়। তারপর ইন্টারভিউ মারফৎ মেধা তালিকা প্রকাশিত হল। সাড়ে ১৬ হাজার শূন্য পদের মধ্যে ১৫ হাজার ২৮৪ জনের মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ফাঁকা রাখা হয়েছে ১ হাজার ২১৬টি পদ। যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন তাঁদের জন্য পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে।


ভোটের মুখে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক দল।


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘১০ বছরে তৃণমূল কিছুই করতে পারেনি। তাই ভোটের আগে ঘুষ দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা হচ্ছে।’


পাল্টা শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘ভোটের মুখে নয়, বহু দিন ধরেই চেষ্টা করছে শিক্ষা দফতর। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নেওয়ার পর মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।’


প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর, বুধবার থেকে শুরু হতে পারে কাউন্সেলিং। সেক্ষেত্রে বিধানসভা ভোটের আগেই ১৫ হাজারের বেশি প্রার্থীর হাতে নিয়োগপত্র পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা।


এদিকে ৩১ জানুয়ারি আরও একটি টেট নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই পরীক্ষার ফলপ্রকাশ কবে হবে তা স্পষ্ট নয়।


 


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI