দক্ষিণ দিনাজপুর: দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের জেল হবে। বিজেপির রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা মাঝেমধ্যেই সারদা থেকে নারদকাণ্ডকে হাতিয়ার করে এমন হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। বুধবার, দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর থেকে পাল্টা হুঙ্কার দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার হুঙ্কার, তিনি জেলের পরোয়া করেন না, তাঁর দলও করে না।

এদিন তৃণমূলনেত্রী বলেন, আমার সংগ্রামী জীবন। আমি মানুষের পাহারা দিই। বিজেপি কেন তাদের পিতামহরাও কিছু করতে পারবে না। তুমি আমাকে, তৃণমূলকে সবাইকে জেলে পাঠাও, তুমি ইডি-সিবিআই সব লাগিয়ে দাও, কিছু করতে পারবে না। মানুষ যোগ্য জবাব দেবে। ধমকানি, চমকানি, চোখ রাঙানি আমি সহ্য করি না। মানুষের কথা বলছি, তাই বিজেপি তুমি ভাবছ, আমাকে জেলে পাঠাবে। মানুষ তোমাকে ধান দুব্য দেবে!

সেন্টার ফর ইন্টারনেট অ্যান্ড সোসাইটি বা সিআইএস সম্প্রতি তাদের একটি রিপোর্টে দাবি করেছে, চারটি সরকারি পোর্টাল থেকে প্রায় সাড়ে তেরো কোটি মানুষের আধার নম্বর ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গও এ দিন উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। নেত্রী বলেছেন, আধারের গোপন তথ্য প্রকাশ্যে চলে আসছে। এই সব তথ্যকে হাতিয়ার করে মানুষের তো টাকা লুঠ হয়ে যাবে। গরুরও আধার কার্ড লাগছে, এবার মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের জন্যও আধার কার্ডের কথা বলবে। লিভারের, কিডনির আধার কার্ড চাইবে। দেশে সব মহাঋষি এসে গেছে। মহাপুরুষ এসে গেছে। ভগবানের আকাল হয়েছে।

সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অভিযোগ তুলেও এ দিন বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ধর্মের নামে এরা মানুষ খুন করছে। এরা হিন্দু ধর্মের কলঙ্ক। এরাই হিন্দু বিদ্বেষী। কয়েকটা লোক উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। না জানে বাংলার সংস্কৃতি। না জানে বাংলা। এদের থেকে সতর্ক হোন। আমরা মা-কে ঠাকুরের আসনে রাখি। আর ওরা তরোয়াল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। দিল্লি থেকে কয়েকটা অপদার্থ এসেছে। তারা মানুষ খুন করছে আর টাকা দিয়ে বলছে হরে কৃষ্ণ হরে রাম। দিল্লি থেকে এল রাম, সঙ্গে জুটল বাম। সিপিএমের কোলে বিজেপি দোলে। আমরা সেই হরেকৃষ্ণের কথা বলি যা মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির কথা বলে।

একইসঙ্গে, এ দিন ফের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন মমতা। বলেন, কেন্দ্র টাকা তো দেয়ই না, উল্টে নানা উন্নয়নমূল কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি মাওবাদী এলাকায় উন্নয়নের প্রকল্পও কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ ওরা মাওবাদী সামলাতে পারে না। ছত্তীসগড়ে মাওবাদী আক্রমণ হল। যে প্রকল্পে ৫০ টাকা কেন্দ্র দেবে, ৫০ টাকা রাজ্য দেবে, সেই প্রকল্পের নাম কেন্দ্রের নামে হবে কেন? যেখানে কেন্দ্রই একশো টাকা দেবে, সেখানে তাদের নাম রাখুক। দেশটা কি বিকিয়ে গেছে না কি।