কলকাতা: রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত ৪ মন্ত্রী।  রাজীব বন্দোপাধ্যায়-সহ গরহাজির ৪ মন্ত্রী। রাজীব ছাড়াও গৌতম দেব, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, চন্দ্রনাথ সিনহা-মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই ৪ মন্ত্রী অনুপস্থিতিতে জল্পনা তৈরি হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে চারমন্ত্রীর অনুপস্থিতির খবর সামনে আসার পরেই নবান্নের অলিন্দে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে কেন অনুপস্থিত চার মন্ত্রী? তাহলে কি ফের ভাঙন ধরতে পারে?  যদিও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সাফ জানিয়ে দেন, তিনি তৃণমূলেই আছেন। থাকবেনও। তিনি বলেছেন,   দিদিকে জানিয়েছি। দুয়ারে কর্মসূচি ছিল। প্রচুর মানুষ আসে। তাদের পাশে থাকাটা আমার কর্তব্য ছিল। আমার ছুটি অনুমোদন করেছেন। আমি মরে গেছি এটা শুনলে বিশ্বাস করবেন, কিন্তু দিদির সঙ্গে নেই, এটা বিশ্বাস করবেন না। বিজেপি সাম্প্রদয়িক দল। আমি কোনওদিন বিজেপিতে যাব না

অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, আমার শরীর ভাল নেই। তবুও স্থানীয় স্তরে কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাচ্ছি। কিন্তু চিকিত্‍সকদের পরামর্শ মেনে বিমানে উঠছি না। তাই ক্যাবিনেট মিটিংয়ে যাইনি। তা ছাড়া এ নিয়ে আমার অনুমতি নেওয়া আছে।

রবিবারই বোলপুরে বিশাল রোড শো করেন অমিত শাহ। তার দু’দিনের মাথায় বীরভূম থেকে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য তথা মত্‍স্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার অনুপস্থিতি নিয়েও জল্পনা শুরু হয়।

যদিও তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ২৯ ডিসেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রয়েছেন তিনি।

রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত চারজনের মধ্যে তিনজনের প্রতিক্রিয়া মিললেও, কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

বনমন্ত্রীর অনুপস্থিতির কারণ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তৃণমূলের মহাসচিব।তিনি বলেছেন, চারজন অনুপস্থিত। আপনারা শুধু রাজীবের কথা জিজ্ঞেস করছেন কেন? নিশ্চয় কারণ আছে। সেইজন্যই আসেনি। মুখ্যমন্ত্রী জানেন।

দীর্ঘ জল্পনার পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।রাজ্য রাজনীতিতে এখন আরেক প্রশ্ন, শুভেন্দুর মতোই তরুণ মুখ তথা হেভিওয়েটমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কী করবেন? এই প্রশ্নের মধ্যেই সোমবার ফের বনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের মহাসচিব। গতকাল পৌনে ১২টা নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে পৌঁছন রাজীব।দু’জনের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা হয়।

যদিও বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে দু’জনেই বিশেষ কিছুই বলতে চাননি। আগের দিন প্রশান্ত কিশোর থাকলেও, এদিনের বৈঠকে ছিলেন না তৃণমূলের ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট।

কখনও দলে স্তাবকতার অভিযোগ তুলে, কখনও আবার ব্রাহ্মণদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর আর্থিক প্যাকেজ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মুখ খুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

এর ফলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরেও তৈরি হয় জল্পনা। এরপরপরই গত ১৩ ডিসেম্বর মন্ত্রীর মান ভাঙাতে প্রথমবার তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৈঠকে ছিলেন ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরও।ঠিক এক সপ্তাহ পর আবারও বনমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক করলেন তৃণমূলের মহাসচিব।

সৌগত রায়ের সঙ্গেও বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।তারপরও সমঝোতা হয়নি!

দল বদলেছেন তিনি।রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কী করবেন? মান ভাঙল? না কি হঠাৎ‍ই কোনও চমক দেখা যাবে?  উত্তর ভবিষ্যতের গর্ভে।