কলকাতা: ‘ভবানীপুরে উপনির্বাচন করাতে কোনও বাধা নেই’, জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।  নির্দিষ্ট সূচি মেনে ওই আসনে ভোট হবে বলে জানালেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল। অর্থাৎ, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ভবানীপুর বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হবে। তবে মুখ্যসচিব ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পর্যবেক্ষণ কড়া মন্তব্য করেছে  ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ।


মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে কড়া পর্যবেক্ষণ আদালত বলেছে, ‘সরকারি কর্মচারী থেকে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের দলদাস হিসাবে নিজেকে দেখাতে চেয়েছেন। ভবানীপুরে উপ নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সঙ্কট হবে, বলেছেন মুখ্যসচিব। একজন প্রার্থী ভোটে জিতলে বা হারলে কী ধরনের সাংবিধানিক সঙ্কট হয়? সেটা মুখ্যসচিব স্পষ্ট করে বলেননি। মুখ্যসচিব কী করে জানলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর থেকে লড়বেন?’ তিনি তো কোনও দলের মুখপাত্র বা রিটার্নিং অফিসার নন,  যিনি না জিতলে সাংবিধানিক সঙ্কট হবে, তাঁর জেতা নিশ্চিত করা মুখ্যসচিবের কাজ নয়।’


নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তির কিছু অংশে আপত্তি জানিয়ে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। এই মামলাতেই এদিন রায় ঘোষণা করা হয়েছে। ভবানীপুরে উপনির্বাচন না হলে তৈরি হতে পারে সাংবিধানিক সঙ্কট। এই মর্মে সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যসচিব। ভোটের বিজ্ঞপ্তিতে সেই কথা উল্লেখ করে কমিশন।কমিশনে চিঠি দেওয়া নিয়ে মুখ্যসচিবের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে কয়েক দিন আগে কলকাতা হাইকোর্টে হয় মামলা।


 উল্লেখ্য, এর আগে মামলাকারীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, নির্বাচন না হলে সাংবিধানক সঙ্কট তৈরি হবে এমন কোনও কথা নেই। একজনকে মুখ্যমন্ত্রী করার দায় মুখ্যসচিবের নয়। সংবিধান সকলের জন্য সমান। ইন্দিরা গাঁধীর নির্বাচন এই গ্রাউন্ডে বাতিল হয়।


ভবানীপুরে উপনির্বাচন নিয়ে কমিশনের হলফনামা গ্রহণ করেনি আদালত।দালতের তোলা প্রশ্নের জবাব না থাকায় বিরক্ত হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ।


তবে এই মামলার শুনানিতে আরও একটি প্রশ্ন উস্কে দিয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, গোটা দেশে ভোটে জিতে আসন অন্যের জন্য ছেড়ে দেওয়া বা নতুন করে ভোট করানোর পরিস্থিতি তৈরির প্রবণতা রয়েছে। এর জন্য সাধারণ মানুষের টাকা খরচ হচ্ছে। আদালতের প্রশ্ন, এমন ক্ষেত্রে নতুন করে ভোটের খরচ কেন জনগণের টাকায় হবে? আগামী দিনে বৃহত্তর স্বার্থে এই নিয়ে শুনানি হবে বলে জানায় কলকাতা হাইকোর্ট।