কলকাতা: গতকালের তুলনায় খানিকটা বাড়ল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার প্রকাশিত রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮৯৯ জন। এই নিয়ে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৫,১৭,৩৮০ জন। ১৭ জুলাই-এর হিসেবে রাজ্যে এই মুহূর্তে করোনার অ্য়াক্টিভ কেসের সংখ্যা ১৩,৩৩৩ জন।


সরকারি হিসেব অনুযায়ী রাজ্য়ে গত ১ দিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৮ জন। গতকাল সংখ্যাটা ছিল ১০। ৯ জুলাই-এর পর যা প্রথম। এ নিয়ে শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনা সংক্রমিত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৭,৯৮৮ জনের। পাশাপাশি এই সময় পর্বে রাজ্যে করোনামুক্ত হয়েছেন ১০৪২ জন। রাজ্যে এই মুহূর্তে সুস্থতার হার ৯৭.৯৪ শতাংশ। 


৬৮ দিন পর বাংলায় এক অঙ্কে নেমে এল দৈনিক মৃত্যু। প্রায় তিন মাস পর কলকাতায় করোনায় মৃত্যু শূন্য। মৃত্যুর সংখ্যা স্বস্তি দিলেও, চিন্তা বাড়িয়ে সংক্রমণে ফের শীর্ষে উঠে এসেছে দার্জিলিং।


করোনা বিধি লঙ্ঘন নিয়ে কড়া মনোভাব নিচ্ছে নবান্ন। মুখ্যসচিবের জেলা শাসকদের নির্দেশ। করোনা বিধি না মানলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। গতকালই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদি ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।


তৃতীয় ঢেউ সামলাতে কতটা প্রস্তুত রাজ্য? আর কোন কোন জায়গায় পরিকাঠামোয় উন্নতি প্রয়োজন? নেতৃত্বে এম ধরণের বিভিন্ন বিষয়েও এ দিন দফায় দফায় বিস্তারিত আলোচনা চলে স্বাস্থ্য ভবনে। প্রথমে রাজ্যের অন্যান্য সচিবদের সঙ্গে ও তারপর রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসক এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠক সারেন মুখ্যসচিব-স্বাস্থ্যসচিব।


সবমিলিয়ে দ্বিতীয় ঢেউ-এর পর তৃতীয় ঢেউ রুখতে তৎপর প্রশাসন। জেলায় জেলায় ইতিমধ্যেই কোভিড বিধি পালনে একাধিক পদক্ষেপ করেছে সরকার। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। 


করোনা আবহে দিঘায় প্রবেশে কড়াকড়ি করেছে প্রশাসন। আরটিপিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট কিংবা টিকার দু’টি ডোজের শংসাপত্র না থাকলে ঢোকা যাবে না দিঘায়। ইতিমধ্যেই দিঘা ঢোকার মুখে পর্যটকদের নথি পরীক্ষা করছে পুলিশ। খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে হোটেলগুলিতেও। বিধিভঙ্গের অভিযোগে ২ হোটেল কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যেই শোকজ করেছে প্রশাসন। 


ডুয়ার্সের বিভিন্ন হোটেল ও রিসর্টে পর্যটক আসার ক্ষেত্রে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, ডবল ডোজ নেওয়ার সার্টিফিকেট এবং ৪৮ ঘণ্টা আগে RTPCR টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট থাকলে তবেই মিলবে হোটেল অথবা রিসর্টে থাকার অনুমতি। জেলাশাসক জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিচার করে ডুয়ার্সের বিভিন্ন এক্সিট পয়েন্টে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 


অন্যদিকে দেশেও ফের বেড়েছে দৈনিক মৃত্যু। তবে কমেছে দৈনিক সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের শনিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫৬০ জনের। 
একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৭৯।  


দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ লক্ষ ১৩ হাজার ৯১ জনের। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লক্ষ ৬৪ হাজার ৯০৮।  অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৪ লক্ষ ২৪ হাজার ২৫। এরই মধ্যে করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েছেন ৩ কোটি ২ লক্ষ ২৭ হাজার ৭৯২ জন। একদিনে সুস্থতার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৯১৬।