বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি: আগামীকাল, রবিবার প্রকাশিত হতে চলেছে বিজেপির বাকি প্রার্থীদের তালিকা? তেমনই ইঙ্গিত দিলেন দিলীপ ঘোষ। গতকালই দিল্লি পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
শনিবার সকালে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার বাড়িতে বৈঠকে বসেন অমিত শাহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী।
দিলীপ ঘোষ জানান, রাজ্যের বাকি আসনের প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে আলোচনা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'বিসর্জনের' জন্য সকলে প্রস্তুত বলেও কটাক্ষ করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। এনিয়ে তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এর আগে, গত ৬ তারিখ প্রথম দু’দফার ৬০টি আসনের মধ্যে ৫৭টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বিজেপি। তার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য, নন্দীগ্রাম আসনে মমতা বন্দ্যোপাদ্যায়ের বিরুদ্ধে ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীকে দাঁড় করায় বিজেপি।
ডেবরায় লড়াই দুই প্রাক্তন আইপিএসের। ডেবরা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ভারতী ঘোষ। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীর।
ময়না কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করে ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোক দিন্দাকে। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী সংগ্রাম দলুই।
তালিকায় এমন অনেকেই জায়গা পেয়েছেন, যাঁরা অন্য দল থেকে এসেছেন। যেমন পুরুলিয়া সদরের বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। গত ১৯ ডিসেম্বর, মেদিনীপুরে অমিত শাহর সভায় তিনি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। পুরুলিয়া সদর কেন্দ্রেই সুদীপকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি।
গত ১৯ ডিসেম্বর, মেদিনীপুরে অমিত শাহ-র সভায় বিজেপিতে যোগ দেন হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। হলদিয়াতেই তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
তাপসীর সঙ্গেই অমিত শাহ-র সভায় দলবদল করেছিলেন, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কাঁথি উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক বনশ্রী মাইতি। তবে তাঁকে প্রার্থী করেনি গেরুয়া শিবির। ওই কেন্দ্রে বিজেপির টিকিট পেয়েছেন সুনীতা সিংহ।
গত ১৯ ডিসেম্বর, সিপিআই ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বাম বিধায়ক অশোক দিন্ডা। তাঁকেও এবার প্রার্থী করা হয়নি। তমলুকে পদ্মের হয়ে লড়বেন হরেকৃষ্ণ বেরা।
অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য ও শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত। অমূল্য মাইতিকে সবং থেকে এবং রমাপ্রসাদ গিরিকে নারায়ণগড় থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
দু’জনেই গত ১৯ ডিসেম্বর, মেদিনীপুরে অমিত শাহর সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দান করেন।
একসময় সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন অন্তরা ভট্টাচার্য। ২০১৪-তে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যকে পিংলায় প্রার্থী করেছে দল।
প্রথম দু’দফার প্রার্থী তালিকায় এমন আরও অনেকে আছেন, যাঁরা অন্য দল থেকে এসে টিকিট পেয়েছেন। পুরুলিয়ার জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ নরহরি মাহাত।
বাঁকুড়ার তালডাংরার বিজেপি প্রার্থী শ্যামল সরকার। ঝাড়গ্রামের বিনপুর কেন্দ্রের প্রার্থী পালান সোরেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার প্রার্থী চিত্ত প্রামাণিক এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা বিজেপি প্রার্থী শিবরাম দাস দলবদলের পুরস্কার পেলেন বলেই পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের ধারনা।