মোহন প্রসাদ, দার্জিলিং: প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হলেও, কার্শিয়ঙে বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করে দিয়েছেন বিমল গুরুঙ্গপন্থী মোর্চার নেতা-কর্মীরা। গুরুঙের ছবি নিয়ে চলছে প্রচার। যদিও একে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বিনয় তামাঙ্গপন্থীরা।


দার্জিলিঙের তাপমাত্রা এখন মনোরম। কিন্তু, ভোটের উত্তাপে ফুটছে পাহাড়ের রাজনীতি। আর বিধানসভা ভোটের আগে ফের সামনে এসেছে গোর্খাল্যান্ড ইস্যু। বহু পুরনো এই ইস্যুকে সামনে রেখেই প্রচার শুরু করেছেন বিমল গুরুঙ্গপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা-কর্মীরা।


সাড়ে তিন বছর লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে গত বছর, আচমকা প্রকাশ্যে এসে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। এরপরই পাহাড়ের রাজনীতি নতুন মোড় নেয়। 


পাল্টা সমর্থনের কথা জানিয়ে পাহাড়ের তিনটি আসন দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়ং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জন্য ছেড়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


তবে এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে মোর্চা এখনও প্রার্থী না দিলেও, বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করেছেন গুরুঙ্গপন্থীরা। সঙ্গে নেতার ছবি। মুখে গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ।


পাহাড়ে একদা ঘনিষ্ঠ বিমল গুরুঙ্গ ও বিনয় তামাঙ্গ এখন একে অপরের জাত শত্রু। তিন কেন্দ্রে আলাদাভাবে প্রার্থী দেবেন তামাঙ্গও। সূত্রের খবর এমনটাই। ফলে বিরোধী গোষ্ঠীর প্রচারকে আমল দিচ্ছেন না তামাঙ্গপন্থীরা।


কারণ, দু’টি গোষ্ঠী সূত্রেই খবর, পাহাড়ের তিন আসনে আলাদা করে প্রার্থী দেবে তারা।


বিনয়পন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা শিবির জানিয়েছে, প্রতিশ্রুতিপূরণ করায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। আশাবাদী, পাহাড়ে তারাই জিতবে। জিতে সরকারের সঙ্গে কাজ করবে।


পাহাড়ের বাঁকের মতোই মোড় ঘুরেছে এখানকার রাজনীতির।  ২০০৯ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী যশবন্ত সিংহ। 


এরপর ২০১৪ ও ২০১৯-এ পরপর দু’টি লোকসভা ভোটেও মোর্চার সমর্থন নিয়ে জয়ী হন বিজেপির সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া ও রাজু বিস্ত।  


কিন্তু, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে স্থায়ী সমাধান না হওয়ায়, বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে, গতবছর তৃণমূলের হাত ধরার কথা ঘোষণা করেন বিমল গুরুং। 


এদিকে, পাহাড়ে এবার জিএনএলএফ-এর সঙ্গে লড়ার কথা ঘোষণা করেছে বিজেপি। 


মূলত গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে তৈরি হওয়া গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা আজ দ্বিধাবিভক্ত। ভোটে কোন শিবির বাজিমাত করবে এখন সেটাই দেখার।