আশাবুল হোসেন, পূর্ব বর্ধমান: এতদিন বিধানসভা ভোটের মুখে দলবদল করে বিজেপিতে যাওয়াদের মীরজাফর, বিশ্বাসঘাতক বলে আক্রমণ করত তৃণমূল নেতৃত্ব। এবার কালনার দলীয় সভা থেকে দলত্যাগীদের 'কুসন্তান' বলে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, "যারা মায়ের দুঃসময়ে পাশে থাকে না তাঁরা কুসন্তান।"
সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এক-এক করে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধায়, বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল, উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, মন্তেশ্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজা, নাগরাকাটার বিধায়ক সুকরা মুণ্ডা, শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য, কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী-সহ একাধিক বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধি।
এই প্রেক্ষাপটে এদিন দলত্যাগীদের নিশানা করলেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, "যারা দল ছেড়ে গেছে, ভাল হয়েছে, পাপ বিদায় নিয়েছে। যারা দলে থেকে তৃণমূলের ক্ষতি করবে, তাঁদের প্রয়োজন নেই, যারা মায়ের দুঃসময়ে পাশে থাকে না তাঁরা কুসন্তান, বিজেপি তাঁদের নিয়েছে, পরে বুঝতে পারবে।"
এখানেই থেমে থাকেননি তৃণমূলনেত্রী। বলেন, "দু-একজন দুষ্টু গরু, যারা হাম্বা, রাম্বা করে, তারা অনেক দুর্নীতি করেছে। তাদের এখন মনে হয়েছে, যদি গরু কেসে কয়লা কেসে, হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছি, যদি ধরা পড়ি। বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকেছে। কালো হয়ে যাচ্ছে, সাদা হয়ে আসছে। এগুলো কালো কাদা। কাদাগুলো জমা হয়েছে এক জায়গায়।"
তৃণমূলনেত্রীর মতে, "সিরাজদ্দোল্লার সঙ্গে মীরজাফর গদ্দারি করেছিল। তাদের দেশ ক্ষমা করেনি। যারা বিজেপি করে গদ্দারি করছে, তাদের ক্ষমা করবেন না।"
মমতা আরও বলেন, "রাজনীতি ৩ রকম মানুষ করে। একদল লোভী, একদল ভোগী আরেকদল ত্যাগী। আমি কতটা ত্যাগী জানি না। যার যতটুকু প্রয়োজন নিশ্চয়ই পাবে। ছেলেমেয়েরা পড়বে। বাড়িতে টিভি, ফ্রিজ থাকবে - এটা তো অন্যায় নয়। এখন ইংরেজি মাধ্যম স্কুল করে দিয়েছি গ্রামে। মনে রাখবেন, আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। "
তিনি যোগ করেন, "অনেকে আমাকে আদর্শের কথা জিজ্ঞাসা করে। আমি বলি, আমরা জনগণের পক্ষে। আজ অবধি জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত নিইনি। সব সিদ্ধান্ত জনগণের পক্ষে। কেউ কিছু না কিছু পায়।"