রুমা পাল, কলকাতা : ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আগমন শুরু হয়ে গেল শনিবার থেকে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও বরাবর বিরোধীদের অভিযোগ তোলেন রাজ্য পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিকভাবে এলাকায় টহলদারি করিয়ে রাস্তা চেনায় না। সেসব অভিযোগের জবাবও দিতে এবার আগে থেকেই সতর্ক কমিশন। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের চিঠি এসে পৌঁছেছে কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এর দপ্তরে। যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে ত্রিস্তরীয় নজরদারির কথা বলা হয়েছে।


এই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারি মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এর দপ্তর, রাজ্যের এডিজি-আইন শৃঙ্খলা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কো-অর্ডিনেটর বিএসএফের ডিআইজি রাজিব তৌফিক  তিনজনে মিলে ঠিক করবেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি কোথায় কোথায় হচ্ছে, রাজ্য পুলিশ কীভাবে বাহিনীকে সাহায্য করছে, তাদের কী কী সুবিধা বা অসুবিধা রয়েছে এসব কিছুর রিপোর্ট পৃথক পৃথকভাবে কমিশনকে পাঠাতে হবে।


শনিবার রাজ্যে পা রেখেছে ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। রবিবার আরও ৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। ২৫ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে আসবে।


কমিশন সূত্রে খবর, মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে পারে। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে দেরি হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির জন্য ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে এত দেরী হচ্ছে।


কমিশন সূত্রে খবর রাজ্যে ১৮০০০ বুথ ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ সংবেদনশীল। রাজ্যের ৫০ শতাংশ বুথই  সংবেদনশীল বা অতিসংবেদনশীল। উত্তর ২৪ পরগনা ,দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি ,ঝাড়গ্রাম ,পুরুলিয়া এবং বীরভূম জেলা সংবেদনশীল তালিকায় রয়েছে।


এমনিতেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে কমিশনের কড়া নজর রয়েছে। ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদের রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ওপর বোমা হামলার ঘটনার রিপোর্ট পৌঁছে গেছে দিল্লিতে কমিশনে। ভোটের সময় রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বরাবরই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন এবং সে কারণেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট শুরু হওয়ার আগেই চলে এসেছে রাজ্যে।


নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ কলকাতায় এসে বলেছিলেন যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আগেই চলে আসবে। এখনও পর্যন্ত যা খবর ১০০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে চলেছে রাজ্যে। তবে প্রয়োজনে আরও বাড়তেও পারে বাহিনী সংখ্যা।


যেসব পুলিশ জেলায় এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনী রুটমার্চের মাধ্যমে টহলদারি শুরু করেছে সেইসব পুলিশ জেলা গুলি হল বিধাননগর, ডায়মন্ড হারবার, ব্যারাকপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ,পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, দুর্গাপুর পূর্ব বর্ধমান , হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এবং হাওড়া গ্রামীণ,  হুগলি। 


মূলত ভোটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগানো ,সুষ্ঠু-অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী এত তাড়াতাড়ি আসা প্রয়োজন বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন।