সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ : কার দখলে থাকবে হাসপাতালের রোগী পরিষেবা কেন্দ্র? এই নিয়েই চরমে উঠল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। অমল আচার্য ও কানাইয়ালাল আগরওয়ালের অনুগামীরা জড়ান বিবাদে। যার জেরে  ভাঙচুর হল তৃণমূল কংগ্রেসের পরিচালিত হাসপাতালের পরিষেবা কেন্দ্র। ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। হাসপাতাল পরিষেবা কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী, পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় হয় র‍্যাফও। পুলিশ পরে তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত হাসপাতাল রোগী পরিষেবা কেন্দ্রটি তালাবন্ধ করে দেয়। ভোটের ঠিক আগে রায়গঞ্জ শহরে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘিরে চরম অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।


গ্রামগঞ্জের সাধারণ গরীব দুস্থ মানুষ রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তথা রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে নানান সমস্যার সন্মুখীন হন। সাধারণ মানুষের সেই সব সমস্যা দূরীকরণের জন্য ২০১৪ সালে তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অমল আচার্যের নির্দেশে হাসপাতালের সামনে একটি দোকানঘরকে রোগী পরিষেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে স্থানীয় তৃনমূল নেতা তপন নাগ। এরপর সম্প্রতি দলের রাশ হাতে আসে কানাইয়ালাল আগরওয়ালের হাতে। তপন নাগ সহ সকলেই কানাইয়ালালের অনুগামী বলে পরিচিত হন। কিন্তু হাসপাতাল রোগী পরিষেবা কেন্দ্রটি অমল আচার্যের অনুগামীদের দখলেই থেকে যায়।  


এদিকে শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে এবারে ইটাহার বিধানসভায় টিকিট না পাওয়া থেকে শুরু সমস্ত ক্ষমতা খর্ব হয় অমল আচার্যের। ফলে মঙ্গলবার কানাইয়ালাল অনুগামীরা হাসপাতালের সামনে থাকা রোগী পরিষেবা কেন্দ্র থেকে বিরোধী গোষ্ঠীর মহিলা সহ কর্মীদের বের করে দিয়ে অমল আচার্যের ছবি সহ ফ্লেক্স ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। রোগী পরিষেবা কেন্দ্রে থাকা অমল আচার্য গোষ্ঠীর তৃনমূল কর্মীদের অভিযোগ তপন নাগের নেতৃত্বে ভাঙচুর করা হয়েছে।


অপরদিকে তপন নাগের পাল্টা অভিযোগ এতদিন জোর করে দখল করে রেখেছিল ওরা। তৃণমূল জেলা চেয়ারম্যান অমল আচার্যের নাম করে তাকে গদ্দার বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতা তপন নাগ। তাঁর দাবি এই রোগী পরিষেবা কেন্দ্রটি আমরা করেছি। শুভেন্দু অধিকারীর সাথে যোগাযোগকারী বিজেপির দালালদের তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত রোগী পরিষেবা কেন্দ্রে রাখা যাবে না। এদিকে রোগী পরিষেবা কেন্দ্রের বর্তমান দায়িত্বে থাকা কর্মী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মানুষদের পরিষেবা দিয়ে আসছি।


করোনাকালে রোগীর আত্মীয়দের খাবার বিলি করা হয়েছে। সেসময় এখনকার নেতাদের দেখা যায়নি। অন্যায়ভাবে আমাদের কর্মীদের বের করে দিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে তৃনমূল নেতা তপন নাগ ও তার বাহিনী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।