অর্ণব মুখোপাধ্যায়, দীপক ঘোষ ও সন্দীপ সরকার: ব্যাটলগ্রাউন্ড নন্দীগ্রাম।  ভূমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর থেকে প্রার্থী হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


ইতিমধ্যেই, শুরু হয়েছে দেওয়াল লেখা। উল্টোদিকে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে-প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।


তৃণমূল সূত্রে খবর, এই অবস্থায় ভোটের আগে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থাকার ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেছে। নন্দীগ্রামের বড়তলায় ফারুক আহমেদের দোতলা বাড়ি। প্রাক্তন এই সেনাকর্মীর দাবি, এই বাড়িটি তিনি তৃণমূলকে ভাড়া দিয়েছেন। 


তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি সেখ সুফিয়ান জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে আসা নেতাদের থাকার জন্য নন্দীগ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ফারুক আহমেদের বাড়িটি মুখ্যমন্ত্রীর থাকার জন্য ঠিক করা হয়েছে।


সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা আধিকারিকরা এই বাড়িটি দেখে গেছেন। দেওয়ালে মুখ্যমন্ত্রীর নাম লেখা, বাড়িতে কাজ হচ্ছে। 


 



 


অন্যদিকে, নন্দীগ্রামে এসে ফিরহাদ হাকিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য অন্য একটি বাড়ি দেখে গেছেন। সম্প্রতি, নন্দীগ্রামে এসেছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তখনই মুখ্যমন্ত্রীর থাকার জন্য বাড়ির খোঁজ করেন তিনি।


এরপরই সবুজে ঢাকা নন্দীগ্রামের তারাচাঁদ বার এলাকার ইংরেজি শিক্ষকের এই ছিমছাম বাড়িটি পছন্দ হয় পুরমন্ত্রীর। সব ঠিক থাকলে, এটাই হতে চলেছে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্তানা। 


দোতলা বাড়ি, তিন তলায় রয়েছে একটি ঘর। এই বাড়িতে থাকেন মাস্টারমশাই, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, উপরতলা পুরোটাই ফাঁকা, ৪টে ঘর, ২টো বাথরুম, একটা রান্নাঘর, তিনতলায় আরও একটি ঘর। বাড়ির মালিক শেখ মনসুর আলি বলেন, দিদি এই বাড়িতে থাকলে আপত্তি নেই। 


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃতি পছন্দ করেন। ভালোবাসেন গাছ-পালাও! সেই কথা ভেবেই, নন্দীগ্রামের ইংরেজি শিক্ষকের এই বাড়িটিকে পছন্দ করা হয়েছে। এই বাড়ির পিছন দিকের পরিবেশ অনেকটা মমতা যেমন পছন্দ করেন তেমন। গাছ-গাছালির মধ্যে বাড়ি, পিছনে রয়েছে সবেদা বাগান, পিয়ারা, ডালিমের গাছ। দিগন্ত বিস্তৃত ধানক্ষেত।


 



 


অন্যদিকে, এর কাছেই তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সহ সভাপতি শেখ সুফিয়ানের বাড়ি। ফলে, ভোটের কাজ পরিচালনা করতে সুবিধে হবেই বলে মত তৃণমূল নেতৃত্বের।


গলির ভিতরে থাকা এই বাড়িটি অবস্থানগত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য খুবই ভাল বলেই মত তৃণমূল নেতৃত্বের।


ভোটের আগে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বাড়ি খোঁজা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের রাজ্য মহিলা মোর্চা সভানেত্রী  অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, কী হবে বাড়ি দেখে, বিপুল ভোটে হারবে, শুভেন্দু দা তো বলেই দিয়েছেন, ওখানে না দাঁড়ালেই ভাল করবেন।


নন্দীগ্রামের লড়াইয়ের ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী ইতিমধ্যেই তুঙ্গে। 


তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের বাড়িতে তৃণমূলনেত্রীর থাকার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু, পরে তা বাতিল হয়ে যায়। এদিকে, কসবার বোরো কোঅর্ডিনেটর সুশান্ত কুমার ঘোষকে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক করা হয়েছে। নন্দীগ্রামে পাঠানো হচ্ছে তাঁকে। 


সব মিলিয়ে নন্দীগ্রামে লড়াই জমজমাট।