নন্দীগ্রাম : ভোটের মুখে কার্যত দিদি-দাদাকে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত নন্দীগ্রাম। শহিদ পরিবারের একাংশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। কয়েকটি শহিদ পরিবারের অভিযোগ দুঃসময়ে পাশে নেই তৃণমূল। তাঁরা এখন শুভেন্দুপন্থী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগও উঠেছে নন্দীগ্রামে।
১ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার দিন ভোট হবে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। তবে বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার অনেক আগেই নন্দীগ্রামকে আবারও শিরোনামে নিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেকে নন্দীগ্রামের প্রার্থী ঘোষণা করে। তাই স্বাভাবিকভাবে এবারও সবার নজর থাকবে পূর্ব মেদিনীপুরের এই জনপদের দিকে।
তবে ভোটের মুখে সেই নন্দীগ্রামেই উঠে এল অন্য এক ছবি। শহিদ পরিবারেও আজ দিদি বনাম দাদা!
২০০৭-এর ১৪ মার্চ। পুলিশের গুলি চালানো। ২০০৭-এর ১০ নভেম্বর, ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সঙ্গে সিপিএমের সংঘর্ষ। ১৪ বছর আগের একের পর এক রক্তক্ষয়ী ঘটনায়, সন্তানহারা হয়েছে নন্দীগ্রামের ৪২টি পরিবার।
নিজেকে নন্দীগ্রামের প্রার্থী ঘোষণা করায়, বারবার তৃণমূলনেত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানকারী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু শহিদের মা সরস্বতী সামন্ত আজও মমতার পাশেই রয়েছেন। শহিদ সুব্রতর মা সরস্বতী সামন্ত বলেছেন, ‘শুভেন্দু বা মমতা যখন মিছিল করেছেন তখন থেকেছি, কিন্তু মমতা আমাদের কাছে মায়ের মতো, উনি আমাদের সঙ্গেই আছেন, কিন্তু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে দল ছেড়েছেন শুভেন্দু।‘
সুব্রত সামন্তর পরিবার যখন তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে, সুপ্রিয়া জানার পরিবার তখন শুভেন্দু অধিকারীর পাশে। শহিদ সুপ্রিয়া জানার স্বামী সুকুমার জানা বলেছেন, ‘আমরা একাধিকবার দিদির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম, ১০ মিনিটের জন্য কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সুযোগ পাইনি, ২০০৮ থেকে অনেক প্রতিশ্রুতি শুনলেও কিছু পাইনি, দিদির শেষ জনসভায় আমাদের জন্য কিছু বলনেনি, দুঃখ পেয়েছি।’
এদিকে নিখোঁজ সত্যেন গোলের স্ত্রী দুর্গারানি গোল তৃণমূলের বিরুদ্ধে জমি দখলের মতো মারাত্মক অভিযোগ তুলেছে। যে অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্যের শাসকদল।
শহিদ পরিবার যখন এভাবে দাদা-দিদিতে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত, তখন এই নিয়ে দুই দলের নেতাদের মধ্যেও বাগযুদ্ধ চরমে। সবমিলিয়ে ভোটমুখী বঙ্গে বিধানসভা ভোট নিয়ে যেমন উত্তেজনা তুঙ্গে, তেমনই রাজনৈতিক মহলের নজর নন্দীগ্রামের ভোট ফলাফলে।