কলকাতা: ভোটযুদ্ধের আগে রাজ্যের দুই প্রধান দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্য়ে চলছে অহরহ কথার লড়াই। উভয় পক্ষই দাবি করেছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জিতছে তারাই।


এই প্রেক্ষিতে, গতকাল রাজ্যে এসেছিলেন বাংলায় বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। তিনিও দাবি করেন, একুশের নির্বাচনে বিজেপি-ই জয়ী হবে। কিন্তু, তা করতে গিয়ে ভুলবশতঃ বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন তিনি।


ভুল করে তাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়, "২০২১ সালে বিজেপি সাফ।" মেনন বলেন, ‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল অর্ধেক হয়ে গেছে। ২০২১ সালে বিজেপি সাফ।’


তাঁর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। শাসক দলের সাংসদ সৌগত রায়ের খোঁচা, "উনি ঠিকই বলেছেন, তৃণমূলই ক্ষমতায় আসবে..।"


পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে যুযুধান দুই প্রধান প্রতিপক্ষ -- তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। বঙ্গ-দখলের লড়াইয়ে গেরুয়া শিবির যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্য় ও পাল্টা-মন্তব্যের তেজও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


প্রায়ই, বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্য সফরে আসছেন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বিজেপি একাধিক পর্যবেক্ষক ও সহ- পর্যবেক্ষককে নিয়োগ করেছে। তেমনই একজন সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন।


এর আগে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গেও তাঁর মন্তব্য সামনে এসেছিল। সৌরভ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য দাবি বলেছিলেন, সৌরভ অন্য জগতের মানুষ। সেখানে প্রিয় হয়ে থাকবে। হঠাৎ কেউ কেউ মনে করছে, তাঁকে ব্যবহার করে স্বার্থসিদ্ধি করা যাবে। এরকম যারা করছে, প্রেসার হয়, কাম্য নয়। এই মুহূর্তে কেউ যেন চাপ না দেয়।


যদিও, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থেকে অশোকের সেই দাবি খারিজ করে মেনন পাল্টা জানিয়েছিলেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপর কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। সৌরভকে বাংলার বাঘ উল্লেখ করে মেনন বলেছিলেন, আমাদের দরজা সবসময় খোলা আছে, আপনার জিজ্ঞাসা করুন কবে আসবে, এলে সবাই মিলে স্বাগত জানাব।


এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি জারি হতে পারে ভোটের বিজ্ঞপ্তি। জানুয়ারিতেই আসতে পারে কমিশনের ফুল বেঞ্চ।
সেক্ষেত্রে এপ্রিলের মধ্যেই ভোটপর্ব শেষ করার চেষ্টা করা হবে। ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার সুদীপ জৈনের বঙ্গ সফরের শেষ দিনে এমনই সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে।


শুক্রবারই প্রকাশিত হতে চলেছে রাজ্যের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। তবে এরপরেও ভোটে নাম তোলা বা সংশোধনীর কাজ চলবে। এই মুহূর্তে রাজ্যের মোট নির্বাচনী বুথের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৯০৩টি।


কিন্তু নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, করোনা পরিস্থিতিতে সেই বুথের সংখ্যাই ১ লক্ষ পেরিয়ে যেতে পারে। এদিনই দু’দিনের বঙ্গ সফর সেরে দিল্লি চলে যান ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার।


সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে রাজ্যে আসতে পারে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ।আর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।


সেক্ষেত্রে এপ্রিলের মধ্যে বাংলায় বিধানসভার ভোটপর্ব শেষ করার চেষ্টা করা হবে।