সনৎ ঝা ময়ূখঠাকুর চক্রবর্তী: বিধানসভা ভোটের মুখে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে দার্জিলিং, কার্শিয়ং, কালিম্পঙে থাকা ৭০টিরও বেশি মামলা প্রত্যাহার করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, আদালতে গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করার জন্য জেলা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারের আইন দফতর। গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে থাকা UAPA এবং খুনের মামলাগুলি বাদে অন্য মামলা প্রত্যহারের প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। যদিও, এই বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন গুরুং ঘনিষ্ঠ মোর্চা নেতা রোশন গিরি। গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি ও সিপিএম।


গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে দার্জিলিং, কার্শিয়ং, কালিম্পঙে থাকা ৭০টিরও বেশি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, আদালতে গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করার জন্য জেলা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারের আইন দফতর। যদিও, এই বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন গুরুং ঘনিষ্ঠ মোর্চা নেতা রোশন গিরি। তিনি বলেন, ‘আমি কিছু জানি না, আমায় এবিষয়ে কিছু বলেনি।’


পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘আইন দফতর বিষয়টা দেখছে, আমার কিছু বলার নেই।’ এদিকে বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘ভোটের মুখে অনেককিছু দেখা যাবে...পাহাড়-সমতলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল।’ আর শিলিগুড়ির সিপিআইএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটা হাস্যকর, ইউএপিএ-খুনের মামলা প্রত্যহার করতে পারবে না, তৃণমূলের সঙ্গে থাকলে এক আইন, বিপক্ষে থাকলে এক আইন।’


২০১৭ সালের ৮ জুন মাসে, দার্জিলিঙে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিন, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে কার্যত জঙ্গি আন্দোলন শুরু করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। যার জেরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পাহাড়। নষ্ট করা হয় কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি। মাসের পর মাস বনধে স্তব্ধ হয়ে থাকে পাহাড়ের যাবতীয় কাজকর্ম। এর মধ্যে পাহাড় থেকে উধাও হয়ে যান বিমল গুরুং।


পাহাড়ে অশান্তির ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা রুজু হয়। ২০১৭ সালের ১৭ জুন সিংমারিতে সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাতেও বিমল গুরুং ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়। সেবছরই ১৩ অক্টোবর গুরুংকে ধরতে গিয়ে খুন হন সাব-ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিক। সেই মামলাতেও অভিযুক্ত বিমল গুরুং। মামলার পাহাড় জমে থাকলেও গ্রেফতার করা দূরে থাক, তাঁকে খুঁজেই পায়নি রাজ্য পুলিশ। বিধানসভা ভোটের মুখে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসে তৃণমূলের হাত ধরে লড়াইয়ের কথা ঘোষণা করেন গুরুং।


শেষ অবধি কি গুরুং ফ্যাক্টরে লাভবান হবে তৃণমূল? না কি উত্তরবঙ্গে বিজেপির গড় অক্ষত থাকবে? এর উত্তর মিলবে একুশের ভোটের ফল বেরনোর পর।