উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, জঙ্গিপুর: নেই কোনও স্বাস্থ্যকর্মী। করোনা পরীক্ষার নমুনা নিচ্ছেই রোগী নিজেই! কোনও সিরিয়াল নম্বর মানারও নেই বালাই। জঙ্গিপুর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার নামে কার্যত প্রহসন চলছে। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের বক্তব্য, সহকর্মীরা অনেকেই করোনা আক্রান্ত। আর নমুনা সংগ্রহে ভয় পাচ্ছেন নতুনরা!


কোনও স্বাস্থ্যকর্মী নন, করোনা পরীক্ষার জন্য রোগীকে নিজের নমুনা নিজেকেই সংগ্রহ করে দিতে হচ্ছে! মানা হচ্ছে না কোনও সিরিয়াল নম্বর। তাহলে কার রিপোর্ট কে পাবে, কী করে বোঝা যাবে? সন্দিহান রোগীর আত্মীয় পরিজনরা। যদিও হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের বক্তব্য, সহকর্মীরা অনেকেই করোনা আক্রান্ত। নতুনরাও আসতে ভয় পাচ্ছেন। গ্লাভসেরও আকাল। সেই কারণেই সমস্যা। উপায় না থাকায় রোগীকে কিট দিয়ে সোয়াব পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে।


মুর্শিদাবাদ জেলায় করোনার থাবা সবথেকে বেশি পড়েছে যে এলাকাগুলিতে তার মধ্যে অন্যতম জঙ্গিপুর। স্থানীয়রা করোনা পরীক্ষার জন্য অনেকেই ভরসা করেন জঙ্গিপুর হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেই এই দৃশ্য। একজনমাত্র স্বাস্থ্যকর্মী গোটা বিষয়টি দেখছেন। একসঙ্গে রাখা যাবতীয় স্যাম্পেল জঙ্গিপুর হাসপাতাল থেকে পরীক্ষার জন্য যায় বহরমপুরে। এমনিতেই, জঙ্গিপুরের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীর করনার কবলে মৃত্যু হওয়ায় যে কেন্দ্রে পিছিয়ে গিয়েছে ভোটগ্রহণ। 


 


 


এমনিতেই রাজ্যে প্রবলভাবে ঊর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। ১০ হাজার, ১১ হাজার, ১২ হাজার পেরিয়ে শুক্রবারই দৈনিক আক্রান্তের সঙ্গে ১৩ হাজার ছুঁইছুঁই। ভয়ঙ্কর রেকর্ড। শুধু আক্রান্তের সংখ্যাই বাড়ছে না। মৃত্যু মিছিলও অব্যাহত। গড়ে ৫০ জনের বেশি করে সহ নাগরিককে হারাচ্ছি আমরা। গত ২৪ ঘণ্টায় সংখ্যাটা ফের ৬০ ছুঁইছুঁই। দিনে দিনে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায়। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনায় সংখ্যাটা আড়াই হাজারেরও বেশি।



প্রতিদিন বহু মানুষ করোনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। উত্তর ২৪ পরগনায় ১০ জনের। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার ৮২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এ রাজ্যে। অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা একলাফে বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৭৩৭।