করুণাময় সিংহ, মালদা : তিনি নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন! তাঁর বহু রাজনৈতিক সতীর্থও এখন করোনা পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে কিংবা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন! তারইমধ্যেই এহেন চমকপ্রদ মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ। সেইসঙ্গে দিলেন নানা টোটকাও!!!


দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'আমার শরীরে শক্তি রয়েছে, আমি করোনাকে মেরে দিচ্ছি। যাঁরা দুর্বল তাঁদের অ্যাটাক করছে করোনা।' বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির সংযোজন, 'গরম খাবার খেলে তাড়াতাড়ি হজম হয়। ঠান্ডা খেলে শরীরের মধ্যে গিয়ে তা গরম হয়। ফলে শরীরের তাপ চলে যায়। ঠান্ডা জল খাবেন না।'


বিজেপির রাজ্য সভাপতি করোনার হাত থেকে বাঁচতে নানা টোটকা দিলেও, দেশ কিংবা রাজ্য করোনার গতি কিন্তু থামার পরিবর্তে দিনে দিনে ভয়ঙ্কর হচ্ছে।লাগাতার দেশে এক একদিনে ৩ লক্ষের বেশি করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এক এক দিনে মৃত্যু হচ্ছে দু’হাজারেরও বেশি।


 


একদিকে শ্মশানে লাশের সারি, প্লাস্টিকবন্দী দেহ, চিতার আগুন নিভছে না, একটা পুড়ছে, আরেকটা লাইনে, এ এক ভয়ঙ্কর ছবি, অসহনীয়, গোটা দেশের মতোই বাংলাতেও ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে করোনা।


১০ হাজার। ১১ হাজার। ১২ হাজার পেরিয়ে, এবার দৈনিক আক্রান্তের সঙ্গে ১৩ হাজার ছুঁইছুঁই। ভয়ঙ্কর রেকর্ড। শুধু আক্রান্তের সংখ্যাই বাড়ছে না। মৃত্যু মিছিলও অব্যাহত। গড়ে ৫০ জনের বেশি করে সহ নাগরিককে হারাচ্ছি আমরা। গত ২৪ ঘণ্টায় সংখ্যাটা ফের ৬০ ছুঁইছুঁই। দিনে দিনে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায়। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনায় সংখ্যাটা আড়াই হাজারেরও বেশি।


প্রতিদিন বহু মানুষ করোনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। উত্তর ২৪ পরগনায় ১০ জনের। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার ৮২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এ রাজ্যে। অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা একলাফে বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৭৩৭।


পরিস্থিতি যখন ভয়ঙ্কর, শ্মশানে যখন চুল্লির ধোয়া থামছে না, করোনার মধ্যেও লাগাতার সভা-সমাবেশ-রোড শো করে যাওয়ায়, যখন প্রবল সমালোচনার মুখে হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী-নেত্রীরা। তখন সপ্তম ও অষ্টম দফার ভোটের জন্য ভার্চুয়াল প্রচার সভা থেকে সবাইকে করোনা নিয়ে সতর্ক থাকতে বলতে শোনা গেছে নরেন্দ্র মোদিকে।


যদিও, অনেকেই বলছেন, এখন দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে গেছে! নেতা-নেত্রীরা যদি, ভোটের প্রচারের পাশাপাশি আরও আগে থেকে করোনা মোকাবিলায় একটু বেশি সময় দিতেন, তাহলে হয়ত, পরিস্থিতি এতটা ভয়ঙ্কর হওয়ার থেকে রোখা যেত।