কলকাতা: ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মোকাবিলায় ২২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ-পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করল রাজ্য সরকার। এই কমিটি রাজ্যে মিউকরমাইকোসিস পরিস্থিতি ও তার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় তদারকি করবে। 


স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, এসএসকেএম ও ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন, এই দুটির মধ্যে যে কোনও একটি হাসপাতালকে মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসায় উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে। ভবিষ্যতে সেখানেই হবে মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসা। 


মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যখন মৃত্যুমিছিল অব্যাহত, তখন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে এই ছত্রাকজনিত রোগও। এই পরিস্থিতিতে নতুন গাইডলাইন জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। 


গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়েছে-- ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ এড়াতে মাস্কের সঠিক ব্যবহার জরুরি। বিশেষ করে ধুলোবালিময় এলাকা বা নির্মাণস্থলে গেলে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। 


বাগানে বা মাটি নিয়ে কাজ করলে, জুতো, লম্বা ঝুলের ট্রাউজার, ফুল স্লিভ শার্ট এবং গ্লাভস পরা জরুরি। সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্ক্রাবার দিয়ে গা ঘষে স্নান করা জরুরি। 


কোভিড-পরবর্তী ও ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে ব্লাডে গ্লুকোজের মাত্রায় নজর রাখতে হবে। স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার সতর্কতা জরুরি। 


এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্য দফতরের নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসায় প্রতিটি হাসপাতালকে রেডিওডায়গনোসিস, ইন্টারনাল মেডিসিন, ইনফেকশন ডিজিজ, ইএনটি, নিউরোলজিস্ট, অপথ্যালমোলজিস্ট, ডেন্টাল সার্জন, ম্যাক্সিলোফেসিয়াল অথবা প্লাস্টিক সার্জন এবং এন্ডোক্রিনোলজিস্টদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করতে হবে। 


স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি, রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস অর্থাৎ মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের। মৃত্যু হয়েছে ৩২ বছরের এক তরুণীর। মৃত ওই তরুণী কলকাতা পুরসভার ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের সোদপুরের বাসিন্দা ছিলেন।


১১ মে তরুণীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর বাড়িতেই অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। ১৫ মে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ২০ তারিখ, বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় তরুণীর।


মৃতার স্বামী রাজু চক্রবর্তী বলেন, প্রথমে জানতে পারিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। সুগার ছিল, সঙ্গে করোনা পজিটিভ। শম্ভুনাথে ভর্তি করি। চোখ ফুলে গিয়েছিল। সুগার কমিয়ে এনেছিলেন ডাক্তাররা। এইচডিইউ-তে ভর্তি ছিলেন। ডাক্তার বলেছিলেন ধারনা করছি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। চিকিৎসার তো সুযোগ দিল না তো। ডাক্তার বলেছিল নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে।