অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নারদ মামলায় তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়কদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে বিজেপি ছাড়লেন দুই নেতা। এই ঘটনায় বিজেপিকে ধান্দাবাজির দল বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ করেই এমন ব্যক্তিগত মতামত দিচ্ছেন দলত্যাগীরা।
পথ দেখিয়েছেন দীপেন্দু বিশ্বাস। প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন ফুটবলারের কাছ থেকে পাস নিয়ে এবার দল ছাড়ার হিড়িক গেরুয়া শিবিরে। রাজ্যে বেলাগাম করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তৃণমূলের মন্ত্রী বিধায়কদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে বিজেপি ছাড়লেন দুই নেতা। দাঁতনে বিজেপির দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি রঞ্জিত মল্লিক এবং দাঁতন কিষাণ মোর্চার সভাপতি বিকাশ দাস।শুক্রবার দু’জনেই তাঁদের পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতির কাছে।
বিকাশ দাস বলেছেন, করোনার মধ্যে যে ভাবে রাজ্যের মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, এটা ভাল লাগেনি। রঞ্জিত মল্লিক বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছি। দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করছি। এই সময় গ্রেফতার করাটা ঠিক হয়নি।
১৭ মে বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী সঙ্গে নিয়ে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়দের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
কলকাতায় করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা পুরপ্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জেলবন্দি হওয়ায়, করোনা প্রতিরোধ ও টিকাকরণের কাজ ধাক্কা খেয়েছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল।
ঘটনাচক্রে চার হেভিওয়েটের গ্রেফতারির দিনই দিলীপ ঘোষের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেন দীপেন্দু বিশ্বাস। বসিরহাট-দক্ষিণের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক দাবি করেন, নারদকাণ্ডে গ্রেফতার প্রতিহিংসার রাজনীতি। তা ভাল না লাগাতেই তাঁর বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত।
দীপেন্দুর পথে হেঁটে পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপি ছাড়লেন দাঁতনের দুই নেতা। গোটা ঘটনায় পদ্মশিবিরকে ধান্দাবাজির দল বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপি।
আঙ্গুয়া তৃণমূল কংগ্রেস অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেছেন, <কে দল ছাড়়ল, না ছাড়াল তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। বিজেপি বরাবর সন্ত্রাসবাদী ধান্দাবাজির দল। এরা দল ছাড়তে বাধ্য, বিজেপির অস্তিত্বই নেই। যেদিন মন্ত্রীরা গ্রেফতার হন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি আমাকে ফোন করে বলেন, এটা অন্যায় ভাবে গ্রেফতার হচ্ছে।
অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপি সভাপতি সৌমেন তিওয়ারি বলেছেন, দলের অবস্থান থেকে উনি বলছেন বলে মনে হচ্ছে না। এখন উনি ওনার ব্যক্তিগত অভিমত দিচ্ছেন। তলে তলে মনে হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেই এসব করছেন।
জেলা বিজেপি নেতৃত্ব এই দাবি করলেও, দাঁতনের দলত্যাগী দুই নেতার আরও অভিযোগ, ওপরতলার নেতারা সাধারণ কর্মীদের অবহেলা করেছেন। দরকারে পাশে দাঁড়াননি কেউ।