সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ভোট-পরবর্তী অশান্তি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশের পুনর্বিবেচনা চাইল রাজ্য সরকার। চলতি সপ্তাহেই এই আবেদনের শুনানির সম্ভাবনা।
২ জুলাই পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ একাধিক নির্দেশিকা জারি করে। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়--
- ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে পুলিশ বা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে যত অভিযোগ এসেছে, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মামলা রুজু করতে হবে।
- হিংসার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে, এখনও পর্যন্ত কতজন গ্রেফতার হয়েছেন, কতজন জামিন পেয়েছেন, সেই তথ্য দিতে হবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ কমিটিকে।
- যাঁরা যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, প্রত্যেকের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করতে হবে।
- রাজ্য পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাছে এ সংক্রান্ত যা যা তথ্য আছে, সমস্ত মুখ্য সচিবের দায়িত্বে সংরক্ষণ করতে হবে।
- কমিশনের অনুসন্ধান কমিটি, এই নিয়ে যখনই কোনও তথ্য চাইবে, সঙ্গে সঙ্গে তা দিতে হবে রাজ্যকে।
যাদবপুরে, ঘর ছাড়া বিজেপি কর্মীদের ঘরে ফেরাতে গেলে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় হাইকোর্টের কাছে রিপোর্ট দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধান কমিটি।
- যাদবপুরের ঘটনায় কেন আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে না, তা জানতে চেয়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি-এসএসডি রশিদ মুনির খানকে শোকজ নোটিস ইস্যু করেছে আদালত।
- এছাড়াও কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করবে হবে। কলকাতার কম্যান্ড হাসপাতালেই তা করতে হবে।
সেইসব নির্দেশিকা পুনর্বিবেচনার জন্য গতকাল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যের যুক্তি, ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রাথমিক রিপোর্ট পর্যালোচনার সুযোগ মেলেনি। রাজ্য সহযোগিতা করেনি, এমন কোনও তথ্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তার রিপোর্টে উল্লেখও করেনি।
হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ রাজ্যের বক্তব্য না জেনেই একতরফা নির্দেশিকা জারি করেছে বলে আবেদনে উল্লেখ রাজ্যের। তার প্রেক্ষিতেই বৃহত্তর বেঞ্চের ওই নির্দেশিকা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে রাজ্য সরকার।