সুমন ঘরাই, এবিপি আনন্দ:  কলকাতা ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্পকে ঠিকভাবে পরিচালনা করতে অ্যাপেক্স কমিটি গঠন করল রাজ্য সরকার। অ্যাপেক্স কমিটির নেতৃত্বে রাজ্যের মুখ্যসচিব।  রাজ্য, জেলা ও কলকাতা স্তরে গঠন করা হয়েছে ৩টি টাস্কফোর্স। এই কমিটির অধীনেই কাজ করবে টাস্ক ফোর্সগুলি। অ্যাপেক্স কমিটিতে রাখা হয়েছে রাজ্য সরকারি সমস্ত দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের।


উল্লেখ্য,  বিধানসভা ভোটের আগে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যজুড়ে  ক্যাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য আবেদন ও সমস্যার সমাধানের ব্যবস্থা করে সরকার। 


গত বছর  বাঁকুড়াতে দুয়ারে সরকার কর্মসূচীর ঘোষণা করেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে চালু হবে রাজ্য সরকারের দুয়ারে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ শুনবেন প্রশাসনের কর্মীরা। সঙ্গে কেউ কোনও সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হলে তাঁকে সেই প্রকল্পের আওতায় আনার প্রক্রিয়াও শুরু করবেন তাঁরা।


ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার' প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন। কয়েকদিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন যে, '১ সেপ্টেম্বর থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে সুবিধা পেতে শুরু করবেন মহিলারা। তার জন্য দরখাস্ত দিতে হবে। দুয়ারে সরকার শুরু হচ্ছে ১৬ অগস্ট থেকে, চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেখানে মা–বোনেরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য আবেদন করবেন। তফসিলি জাতি–উপজাতির মহিলারা পাবেন মাসে ১০০০ টাকা। আর সাধারণ পরিবারের মহিলারা মাসিক ৫০০ টাকা পাবেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখালেই হবে আবেদন করা যাবে।' তাও দরখাস্ত পত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 


মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে, ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, স্বাস্থ্য সাথী, খাদ্য সাথী, কৃষক বন্ধু, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকার জন্য আবেদন করা যাবে। 


এরইমধ্যে ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্পকে ঠিকভাবে পরিচালনা করতে অ্যাপেক্স কমিটি গঠন করল রাজ্য সরকার। সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,  পশ্চিমবঙ্গ সরকার সাধারণ মানুষের কাছে সুবিধাজনকভাবে ও সময়-নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই লক্ষ্যে সরকার পরিষেবা প্রদানের পদ্ধতি ধারাবাহিকভাবে সম্প্রসারিত ও উন্নত করছে। সরকার মনে করে যে, নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা মানুষ স্থানীয় সমস্যার সমাধানে সক্ষম এবং রাজ্য এই ধরনের উদ্যোগের পাশে রয়েছে। 


এই দুই লক্ষ্যে রাজ্য সরকার মানুষের কাছে পৌঁছতে গত অর্থবর্ষে দুয়ারে সরকার ও পাড়ায় সমাধান অভিযান গ্রহণ করেছিল। এই দুটি উদ্যোগই জনগনের অংশগ্রহণ ও পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে  কার্যকরী ও সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। এই সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বছরে দুবার এই দুটি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 


বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই দুটি প্রকল্পের মসৃণ রূপায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন স্তরে কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজ্য পর্যায়ে  অ্যাপেক্স কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।