কলকাতা: সকালে রাজভবনে বৈঠক। দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় দল।
২ মে ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। ডাবল সেঞ্চুরি করে তৃতীয়বার মসনদে বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভোট পরবর্তী অশান্তিতে তেতে উঠেছে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন এলাকা।
সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে বাংলায়। শুক্রবার তাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ, সাতগাছিয়া বিধানসভার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন।
সাতগাছিয়ার এই অঞ্চলে এসে দেখা যায়, থমথমে পরিবেশ। তছনছ হয়ে পড়ে আছে ঘরবাড়ি। ভাঙা দোকানপাট। লোকজনের চোখে মুখে ভয়।
গ্রামের একপ্রান্তে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি দলকে দেখে এগিয়ে আসেন মহিলারা। নানা অভিযোগ তাঁদের। মহিলারা বলতে থাকেন, ওরা বাড়িতে ঢুকতেই পারছে না, একটা ব্যবস্থা না নিলে কী করে বাড়ি আসবে?
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি দলের কাছে অভিযোগ জানান অনেকে। বলেন, পুলিশ কিছু করতে পারবে না, অনেককে তুলে নিয়ে গেছে। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অফিসার নির্দেশ দেন, কাকে কাকে তুলে নিয়ে গেছে, তাদের নাম লিখতে।
কোথাও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপি কর্মীরা। বলেন, আমরা থানায় বলব? কে নিরাপত্তা দেবে? ৩ দিন পর আপানারা আসছেন! বিজেপি করে কি অপরাধ করেছি?
এদিন সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ৪ প্রতিনিধি যান রাজভবনে। প্রায় দেড়ঘণ্টা তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট দেওয়ার আগে ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়েই আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে।
এর আগে, গতকাল এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ডিজিপির সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি ট্যুইট করে জানান রাজ্যপাল জগদীর ধনকড়।
ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক সন্ত্রাস চলেছে বিভিন্ন জেলায়। সংঘর্ষ, খুন, রক্তপাত, ঘরে-দোকানে হামলার মতো গুচ্ছ গুচ্ছ ঘটনা ঘটেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তৃণমূল, বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চা মিলিয়ে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার বলি হয়েছেন ১৬ জন।
অশান্তির দায় নিয়ে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। দিলীপ ঘোষ বলেন, হিংসা আজও চলছে। ঘাটালের বিধায়ক ভয়ে আসতে পারেনি। জয়ের আনন্দ তখনই পুরো হবে, যখন বাড়িতে শান্তিতে মানুষ থাকতে পারবে। সরকার সেটাই করুন।
পাল্টা বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, এখানে একটা নির্বাচিত সরকার আছে। বাংলায় হিংসার কোন স্থান নেই। শাসকদলের যেমন দায়িত্ব আছে, বিরোধী বিজেপি দলের সেই দায়িত্ব আছে। বিজেপি যেন উস্কানি না দেন , যাতে দুষ্কৃতীরা প্রশ্রয় পায়।
ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতির আবহে রাজনীতির এই উত্তাপ কমুক। একটাই দাবি সাধারণ মানুষের।