বিশ্বজিৎ দাস, খড়্গপুর: এলাকাবাসীর একাংশের ক্ষোভের মুখে খড়গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক। ভারী বৃষ্টিতে কী পরিস্থিতি হয়েছে নিজের নির্বাচনী এলাকায়, তা দেখতে গিয়েই ক্ষোভের মুখে পড়েন হিরণ চট্টোপাধ্যায়। 


নিম্নচাপের বৃষ্টিতে কী অবস্থা হয়েছে এলাকার? কেমন আছেন বাসিন্দারা? তা দেখতেই, শুক্রবার দুপুরে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়েছিলেন খড়গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। 


আর তখনই আইমা এলাকায় এক মহিলার ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। ওই মহিলা বলেন, আপনার জন্য আমরা অনেক পরিশ্রম করেছিলাম। আপনার একবার আসা উচিত ছিল। 


উত্তরে হিরণ বলেন, আমি সরকারে নেই। সরকার পয়সা দেয় না। তখন ওই মহিলা বলেন, সরকারকে বলতে পারব না, আপনাকেই বলতে পারি। খড়গপুরের বিধায়ক হয়েছেন। আপনাকেই অভিযোগ জানাব।


জবাবে হিরণ বলেন, আমি তো করছি। তখন ফের ওই মহিলা জানান, সরকারের কাছে সমস্যা তুলে ধরা আপনার কাজ।


শুধু আইমাতেই নয়, রামনগরে ঢোকার মুখেও কার্যত দেখা যায় একই ছবি। এখানে বিজেপি বিধায়কের গাড়ি ঘিরে ক্ষোভপ্রকাশ করে স্থানীয়দের একাংশ।


ভারী বৃষ্টির জেরে খড়গপুর শহরের ৩১ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সমস্যায় পড়েছেন এখানকার বাসিন্দারা।  আর এতেই ক্ষোভ চরমে উঠেছে ভুক্তভোগীদের।


এক বাসিন্দা বললেন, তিনি এসে ওদিকে চলে গেলেন, আমাদের তো মাটির বাড়ি জলে ডুবে আছে, বিধায়ক গাড়ি থেকে নামলেন না, ভাবছেন হয়তো আমরা গুলি মেরে দেব। 


আরেক বাসিন্দা বললেন, আমাদের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কী সমস্যা আছে উনি একটু বুঝুক। আমরা ওনার কাছে পর্যন্ত পৌঁছতে পারছি না, আমরা ভোট দিয়ে ওনাকে জিতিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম আমাদের সমস্যার সমাধান হবে, বিধায়ক আজ এখানে প্রথমবার এসেছেন


মানুষের এই দুর্ভোগের জন্য দায় কার? এনিয়ে দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে। বিজেপি বিধায়ক বললেন, সাড়ে ছয় বছর ধরে প্রদীপ সরকার খড়গপুর পুরসভা চালাচ্ছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা পুরসভাকে দেওয়া হয়েছে, সে টাকাগুলো গেল কোথায়, আর উনি এই টাকাগুলো নিয়ে করলটা কী।


জবাবে তৃণমূল নেতা ও খড়গপুর পুরসভা প্রশাসক প্রদীপ সরকার বলেন, আজ খড়গপুর পুরসভা ভাসছে রেলের জন্য, রেলের কোনও প্ল্যান নেই, উনি তো রেল ও কেন্দ্রীয় সরকারে আছেন, আমারা রেল এলাকায় গিয়ে কাজ করলে রেল বাধা দিচ্ছে আমাদের, তাহলে আমরা কাজ করব কি করে। 


দিন কয়েক আগে খড়গপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের নামে নিখোঁজ পোস্টার ও ব্যানার পড়েছিল। আর এদিন জল-যন্ত্রণা নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে বিজেপির তারকা বিধায়ক।