কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই জল্পনা শুরু হয়েছে, তিনি কি তৃণমূল ছাড়বেন? তেমনটা হলে কোথায় কোথায় সবথেকে বেশি প্রভাব পড়তে পারে, সেই কাটাছঁড়াও শুরু করে দিয়েছেন অনেকে। একসময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর, মেদিনীপুরে সভা করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুর কলেজ মাঠে জনসভা করবেন তৃণমূলনেত্রী।
তার আগে শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে কর্মিসভাও করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। যদিও এই বৈঠকে ছিলেন না মেদিনীপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রণব বসু,মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সেচ ও জল সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি,মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি,মেদিনীপুরের সহ-সভাপতি তথা খড়গপুরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জহর পাল।
প্রশ্ন উঠছে, এই অনুপস্থিতি কি শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার জের? তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অবশ্য শুভেন্দুকে নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেছেন, শুভেন্দু তৃণমূলেই থাকবেন।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাব যথেষ্ট। তার মধ্যে গত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভাওয়াড়ি ফলের নিরিখে জঙ্গলমহলের চার জেলা অর্থাৎ ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ার
মোট ৪০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৩০টিতে এগিয়ে বিজেপি, ১০টিতে তৃণমূল।
এই প্রেক্ষাপটে শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলনেত্রীর জনসভা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এদিকে, শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ছাড়া নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েই চলেছে বিজেপি।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তৃণমূল সরকার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টে পুরোপুরি ফেল। পার্টিতে যে বিপর্যয় শুরু হয়েছে তা সামলাতে দিদি ব্যস্ত।তাই পার্টির ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের মিটিং প্রতি মুহূর্তে হবে, প্রতি দিন বা প্রতি সপ্তাহে হতে পারে। শুভেন্দুর দফতর মমতা হাতে রেখে দিয়েছেন। সবই তো নিজের হাতে রেখেছেন, শুধু ওনার হাতে ওনার পার্টিটাই নেই।
এর জবাবে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, দিলীপ ঘোষ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের কিছুই বোঝেন না। ডিজাস্টার বলতে আমফান বা ভূমিকম্প বুঝি। তৃণমূলে তেমন কিছু হয়নি। ২১৮ জন বিধায়কের মধ্যে মাত্র একজন গিয়েছেন। ২২ জন লোকসভার সাংসদ, রাজ্যসভাতেও রয়েছে। ওঁর চিকিৎসা করাতে হবে।
সব মিলিয়ে রাজনৈতিক মহলের অলিন্দে এখন একটাই প্রশ্ন ঘিরে তোলপাড়। কী করবেন শুভেন্দু অধিকারী?