দার্জিলিং: কখনও হেঁটে পাহাড়ের পরিস্থিতি পরিদর্শন। কখনও সচিবদের সঙ্গে বৈঠক। কখনও আবার হাসপাতালে আহত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে দেখা। পাহাড়ে ঘাঁটি গেড়ে থাকা মুখ্যমন্ত্রীকে শুক্রবার দিনভর দেখা গেল এমনই তৎপর ভূমিকায়।
প্রায় সব মন্ত্রীই পাহাড় থেকে নেমে এসেছেন। কিন্তু, পর্যটকদের অশান্ত দার্জিলিংয়ে রেখে ফেরেননি মুখ্যমন্ত্রী। শুধু ঘাঁটি গেড়ে থাকাই নয়, শুক্রবার ভোর থেকে দার্জিলিংয়ের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত কার্যত চষে বেড়ালেন তিনি। শরীরী ভাষা থেকে চড়া সুর, পদে পদে বুঝিয়ে দিলেন, কড়া হাতে অশান্তি আটকাতে তাঁর সরকার তৈরি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যান্ডালিজম যারা করছে, গরমেন্ট ইজ টাফ। ৩-৪ জন লোকের জন্য হচ্ছে। আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। তিনি যোগ করেন, অনেক হয়েছে, আর বরদাস্ত করা হবে না। আগুন লাগালে কেউ পার পাবে না।
এদিন ভোরে ম্যাল হয়ে সিংমারি পর্যন্ত হেঁটে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেরেনও আবার হেঁটেই। পথে উদ্বিগ্ন মুখে স্থানীয়দের দেখলেই দাঁড়িয়ে পড়েন। আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, সব ঠিক আছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। ফিরেই আবার রিচমন্ড হিলে মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি-র সঙ্গে বসে পড়েন বৈঠকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার হাসপাতালে ভর্তি জখম পুলিশকর্মীদের দেখতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পথেই মুখ্যমন্ত্রীর চোখে পড়ে একটি শিশুকে স্ট্রেচারে শুইয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন। দেখেই গাড়ি দাঁড় করান মুখ্যমন্ত্রী। শিশুটিকে তুলে নেন গাড়িতে। পরে বলেন, একটা বাচ্চাকে দেখেছি। হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করি।
এরপর হাসপাতালে গিয়ে আহত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার মোর্চা সমর্থকদের ছোড়া ইট ও বোতলের ঘায়ে দু’জন পুলিশকর্মী গুরুতর জখম হন। তাঁদের চিকিৎসার যাবতীয় বন্দোবস্তও রাজ্য সরকার করবে বলে জানিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চোখে লেগেছে। হেলিকপ্টার লিফট করে করে কলকাতা। প্রয়োজনে বিদেশে নিয়ে যাব।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পাহাড়ে ঘাঁটি গেড়ে থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই বার্তাই দিতে চাইলেন যে, মোর্চার জঙ্গি বিক্ষোভে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার পরই রাস্তায় বেরোন অনেক পর্যটকও।