আঙ্কারা: শক্তিশালী ভূমিকম্পে ফের কেঁপে উঠল তুরস্ক। দু’সপ্তাহ আগের ভয়াবহতার রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই ফের নেমে এল বিপর্যয়। সোমবার তীব্র কম্পন অনুভূত হল সেখানে। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৪ (Turkey Earthquake)।


ফের নেমে এল বিপর্যয়, তুরস্ক আবারও কাঁপল ভূমিকম্পে


সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা নাগাদ ভূমিকম্প ঘটে। এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের দক্ষিণের আন্তাকিয়া শহর। পড়শি দেশ সিরিয়া ছাড়াও, মিশর এবং লেবাননেও অনুভূত হয়েছে কম্পন। ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূতত্ত্ব কেন্দ্র জানিয়েছে, মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে কম্পনের উৎসস্থল ছিল (Latest Earthquake in Turkey)।


হাতায়ের মেয়র লুৎফু সাভাস জানিয়েছেন, নতুন করে ভূমিকম্পে ফের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে. ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকে রয়েছেন বলে খবর পেয়েছেন তিনি। সোমবার তিন জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহতের সংখ্যা ৬০০-র বেশি। এর মধ্যে সামানদাগে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের ভূমিকম্পে এমনিতেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা শহর।  তার জেরে শহর খাঁ খাঁ করছে। বাসিন্দারা আগেই এলাকা ছেড়েছেন। তাতেই কিছুটা রক্ষে হয়েছে।


আরও পড়ুন: International Mother Language Day: 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি', আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস


দু’সপ্তাহ আগের ভয়াবহতা এখনও কাটেনি। ধ্বংসস্তূপ জমা হয়ে থাকা শহর ছেড়ে বর্তমানে মধ্য আন্তাকিয়ায় একটি পার্কে তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন কিছু মানুষ। তাঁদের মধ্যে থেকে মুনা আল ওমর সোমবারের ভূমিকম্পের সময় পার্কেই ছিলেন। সাত বছরের ছেলেকে বুকে জড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘মনে হচ্ছিল, পায়ের নিচের মাটি এই বুঝি আলাদা হয়ে হয়ে গেল!’’


দু’সপ্তাহ আগের ভূমিকম্পের রেশ এখনও তুরস্কের সর্বত্র। পড়শি দেশে সিরিয়ার অবস্থা আরও খারাপ। সবমিলিয়ে মৃত্যুসংখ্যা ইতিমধ্যেই ৪৭ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র তুরস্কেই মারা গিয়েছেন ৪১ হাজারের বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪ লক্ষ আবাসন ভেঙে পড়েছে বলে মিলেছে হিসেব। নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ। ভূমিকম্পে গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষ জনের মধ্ে প্রায় ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন।


দু’সপ্তাহ আগের ভূমিকম্পের রেশ এখনও তুরস্কের সর্বত্র


তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তইপ আর্দোয়ান সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলিতে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেঠেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ে ২ লক্ষ আবাসন গড়ে তোলার কাজ শুরু হবে আগামী মাসে।  ইতিমধ্যেই তুরস্কে সাহায্য় পৌঁছে দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আমেরিকার তরফেও আর্থিক সাহায্য মিলছে। আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, যতদিন না ফের ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তুরস্ক, তাঁরা প্রয়োজনীয় সাহায্য দিয়ে যাবেন।