নয়াদিল্লি: জামিয়াকাণ্ডে যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্ত হলেন সমাজকর্মী শার্জিল ইমাম। অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন আর এক সমাজকর্মী আসিফ তনহাও। ২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তির ঘটনায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার সাকেত আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরুল ভর্মা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করেন।
এই মামলায় আগেই জামিন পেয়েছিলেন শার্জিল এবং আসিফ। এ বার অভিযোগই খারিজ করে দেওয়া হল। তা সত্ত্বেও আপাতত জেলেই থাকতে হবে শার্জিলকে। কারণ ২০২০-র ফেব্রুয়ারি মাসে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে দিল্লিতে যে হিংসা ঘটে, সেই মামলাতেও নাম রয়েছে শার্জিলের। তাঁর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়ে হিংসায় মদত জোগানো থেকে দেশবিরোধী সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রতিরোধী UAPA আইনেও মামলা দায়ের করা হয়। এ ছাড়াও একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ।
২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের আন্দোলন চলাকালীন অশান্তি বাধে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ক্যাম্পাসে। সেই সময় ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের উপর লাঠিচার্জ করতে দেখা যায় দিল্লি পুলিশকে। সেই নিয়ে সমালোচনা শুরু হলেস পুলিশ জানা., আন্দোলনকারীদের হাতে প্রহৃত হতে হয় পুলিশকেও। বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। তাতেই ক্যাম্পাসে ঢুকে পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
সেই সময় শার্জিল, আসিফ ছাড়াও সফুরা জারগার, মহম্মদ ইলিয়াস, বিলাল নাদিম, শাহজার রজা খান, মাহমুদ আনোয়ার, মহম্মদ কাসিম, উমের আহমেদ, চন্দা যাদব, আবুজারের মতো একাধিক পড়ুয়া তথা সমাজকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাধানো, অনিচ্ছাকৃত ভাবে খুনের চেষ্টা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগও দায়ের হয়।
আদতে বিহারের জেহানাবাদের বাসিন্দা শার্জিল। তাঁর বাবা আকবর ইমাম রাজনীতিক ছিলেন। সংযুক্ত জনতা দলের হয়ে বিধায়কও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৪ সালে মারা যান তিনি। আইআইটি বম্বে থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন শার্জিল। বেঙ্গালুরুতে কিছু দিন একটি সফ্টওয়্যার সংস্থায় কাজ করার পর দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩ সালে আধুনিক ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করতে ভর্তি হন শার্জিল। ২০১৫ সালে সেখানে পিএইচডি-ও শুরু করেন শার্জিল।
এ ছাড়াও, আইটি ইউনিভার্সিটি অফ কোপেনহাগেনে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজও করেছেন শার্জিল। আইআইটি বম্বে-তে অধ্য়াপনার কাজেও নিযুক্ত ছিলেন। একাধিক সংবাদমাধ্যমে লেখালেখিও করেছেন। জুমিপার নেটওয়ার্কসেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। বেশ কয়েক বছর কাজের পর ফের শিক্ষাক্ষেত্রে ফেরেন তিনি।