নয়াদিল্লি: যে দেশের মেয়েরা বাড়ির বাইরে বেরোলে বাবা-মায়ের চিন্তার শেষ থাকে না। যে দেশের মেয়েরা সামান্য দৌড়োদৌড়ি করলে আত্মীয়-স্বজন থেকে পাড়া প্রতিবেশী অত্যন্ত মূল্যবান জ্ঞানের ভান্ডার থেকে দু চারটে জ্ঞান অবলীলায় বিলিয়ে দেন বাবা-মাকে এই বলে যে, 'মেয়ে সন্তান আগলে রেখো। বিয়ে দিতে হবে তো!' সেই দেশের সঙ্গেই নাড়ির যোগ যে মেয়ের, সে বাড়ি থেকে খুব একটা দূর যায়নি। শুধু মহাকাশ যানে চেপে মহাকাশে ঘণ্টা পঞ্চাশেক হেঁটে রেকর্ড করেছেন শুধু। এতক্ষণে বুঝেই গিয়েছেন, কার নাম বলছি। হ্যাঁ। ঠিকই ধরেছেন। সুনীতা উইলিয়ামসের (Sunita Williams) কথা বলা হচ্ছে। কেন বলছি আজ তাঁর কথা? কারণ, আজ উনিশে সেপ্টেম্বর। আমাদের গর্বের সুনীতা উইলিয়ামসের জন্মদিন। ভারতীয় বংশদ্ভূত এই মহাকাশযাত্রী সম্পর্কে তাঁর জন্মদিনে জেনে নিন কিছু অজানা তথ্য। ভালো তো লাগবেই। গর্বে হয়তো আপনারও পা মাটিতে পড়বে না। 


১. ১৯৬৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমেরিকার ওহিওতে। অর্থাৎ, আজ পঞ্চান্ন পেরিয়ে ছাপ্পান্নতে পড়লেন তিনি। 
২. সুনীতা উইলিমাসের বাবা গুজরাটি। আর মা স্লোভানিয়ার মানুষ। 
৩. ১৯৮৩-তে সুনীতা উইলিয়ামস ম্যাসাচুয়েটসের নিধাম হাইস্কুল থেকে বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেন।
৪. এরপর তিনি পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে ইউনাইটেড স্টেটস নাভাল অ্যাকাডেমি থেকে স্নাতক হন। পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি হাসিল করেন।
৫. ১৯৮৭-তে তিনি আমেরিকার নেভিতে ছ মাসের অস্থায়ী চাকুরিতে ডাইভিং অফিসার হিসেবে যোগ দেন।
৬. ১৯৯৮-তে মহাকাশ যাত্রার জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন সুনীতা উইলিয়ামস।
৭. একটি সাক্ষাৎকারে সুনীতা বলেছিলেন যে, তিনি যখন প্রথমবার মহাকাশে গিয়েছিলেন, তখন তিনি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন ভগবত গীতা, ভগবান গণেশের একটি মূর্তি এবং কিছু সিঙ্গাড়া।
৮. সুনীতা উইলিয়ামস মোট সাতবার স্পেস ওয়াক করেছেন বা মহাকাশে হেঁটেছেন। 
৯. সবথেকে দীর্ঘতম মহাকাশে স্পেস ওয়াক করার রেকর্ডও তাঁর দখলে।
১০. ৫০ ঘণ্টা ৪০ মিনিট তিনি নাগাড়ে মহাকাশে হেঁটেছেন।
১১. দুবার মহাকাশ যাত্রায় সুনীতা উইলিয়ামস মোট ৩২২ দিন মহাকাশে থেকেছেন।
১২. এমন মানুষের পুরস্কারের ঝুলিও ভরা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই সেই সূত্রে সুনীতা উইলিয়ামস ডিফেন্স সুপিরিয়র সার্ভিস পদক পেয়েছেন দু-বার।
১৩. নেভি কমেন্ডেশন পদকও পেয়েছেন দুবার।
১৪. এছাড়াও পেয়েছেন দ্য লিজিয়ন অফ মেরিট অ্যান্ড দ্য মেরিন ক্রপ অ্যাচিভমেন্ট পদক।


সত্যি, সুনীতা উইলিয়ামস হয়তো একাই মহাকাশে এত কিছু করেছেন। কিন্তু তাঁর এই কর্মকান্ডে অনুপ্রাণিত হয়েছে এই পৃথিবীর লাখো লাখো মানুষ। তাঁদের মধ্যে ভারতীয়রা যে একটু বেশিই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে কি?