সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: কোন্নগরে বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল গৃহবধূর মৃতদেহ। দাম্পত্য কলহের কারণেই স্ত্রীকে খুন করেছেন স্বামী, অনুমান প্রতিবেশীদের। মৃতার স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কোন্নগর সূর্য সেন স্ট্রিটের বাসিন্দা রিন্টু দাস পেশায় রংমিস্ত্রি। তাঁর সঙ্গে পল্লবী দাসের বিয়ে হয় নয় বছর আগে। পল্লবী স্থানীয় একটি শাড়ির দোকানে কাজ করতেন।
দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল কোন্নগরের সূর্য সেন স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দা রিন্টু দাস ও তাঁর স্ত্রী পল্লবী দাসের মধ্যে। অভিযোগ, স্বামী রিন্টু প্রতিরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে মারধর করতেন পল্লবীকে।
রিন্টুর সন্দেহ, তাঁর স্ত্রী ফেসবুকে কোনও ছেলের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হতো বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এমনকী, গতকাল রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া ঝামেলা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার সকালে দরজায় তালা লাগিয়ে একা রিন্টু দাসকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে সন্দেহ হওয়ায় উত্তরপাড়া থানার পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা।
পুলিশ এসে বাড়ির শোওয়ার ঘরের বিছানা থেকে রিন্টু দাসের স্ত্রী পল্লবী দাসের মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রতিবেশী ও বাসিন্দা বুলবুলি নাহা বলেন, প্রায়ই ঝামেলা হতো। আজ ঘর থেকে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
আরেক প্রতিবেশী স্বপনকুমার দাস বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য প্রায়সময়ই অশান্তি হত। গতকাল রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝরাত অবধি ঝামেলা চলে। তার পরিণতি এই ঘটনা।
রাগের বশেই বৌমাকে খুন করেছে ছেলে। এমনটাই অনুমান অভিযুক্তের মায়ের। মৃতার শাশুড়ি মানা দাস বলেন, আমি এখানে থাকি না। খবর পেয়ে এই ঘটনা দেখলাম। ফোন নিয়ে মাঝেমধ্যেই আমার বড় ছেলের সঙ্গে বৌমার ঝামেলা হতো। সেই সব ঝামেলাতেই রাগের বশে বৌমাকে মেরে ফেলেছে। গতকালও আমায় ফোন করে বৌমার ফেসবুক করা নিয়ে অভিযোগ করে। আমি ঝগড়া করতে বারণ করি।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার গলায় কালশিটের দাগ ছাড়াও দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মৃতদেহটি শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃতার স্বামী অভিযুক্ত রিন্টু দাসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: দাম্পত্য অশান্তির জের, সন্তানকে খুন করে আত্মহত্যার অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে
আরও পড়ুন: বরানগরে দাম্পত্য কলহের জেরে চলল গুলি, ফেরার অভিযুক্ত