নয়াদিল্লি: নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নতুন নয়। স্বচ্ছতার প্রশ্নে বার বার তাই বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র (EVM)-এর পরিবর্তে ব্যালটে নির্বাচন করানোর দাবি তুলে আসছেন বিরোধীরা। সেই আবহে এবার নির্বাচন কমিশনকে কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। নির্বাচন মিটে গেলেও, EVM-এর আসল তথ্য মুছে ফেলা যাবে না বলে জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। EVM পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেও জানানো হয়েছে। (Supreme Court on EVM)
EVM নিয়ে আদালতে মামলা করেছিল Association for Democratic Reforms (ADR). নির্বাচন পরবর্তী তথ্য যাচাই করার কী ব্যবস্থা করেছে কমিশন, সে নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা। নির্বাচন মিটলে যাতে আসল তথ্য মোছা না হয়, নির্দেশ দিতে আর্জি জানানো হয়। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে মঙ্গলবার সেই নিয়ে শুনানি হয়। ADR-এর হয়ে আদালতে সওয়াল করছিলেন প্রবীণ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। (Election Commission)
এদিন আদালতে প্রশান্ত বলেন, “আমরা চাই, স্ট্যান্ডার্ট অপারেটিং প্রোটোকলের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই নির্বাচন কমিশন চলুক। কাউকে EVM-এর সফ্টওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সফ্টওয়্যার এবং হার্ডওয়্যারে কোনও রকম বিকৃতি ঘটানো হয়েছে কি না দেখা দরকার।”
এতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “ভোট একবার গোনা হলে, পেপার ট্রেল থাকবে না বের করে নেওয়া হবে?” এতে প্রশান্ত বলেন, “EVM-ও রক্ষা করতে হবে। পেপার ট্রেল রেখে দেওয়ারই কথা।”
এর পর প্রধান বিচারপতি জানতে চান, নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর EVM নিয়ে কী নির্দেশিকা রয়েছে? কমিশনকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি, বিচারপতি জানান, আপাতত EVM-এর কোনও তথ্য মোছা যাবে না, নতুন কোনও তথ্যও আপলোড করা যাবে না। নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর EVM-এর মেমরি মুছে ফেলার পদ্ধতি এবং নির্বাচনের পর কী কী প্রক্রিয়া শুরু হয়, তা বিশদে জানাতে বলা হয়েছে কমিশনকে।
এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, “কোনও বৈরিতার বিষয় নয়। কিন্তু পরাজিত প্রার্থী যদি কৈফেয়ত চান, ইঞ্জিনিয়ার প্রমাণ দিতে পারবেন যে কোনও বিকৃতি ঘটানো হয়নি।” কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর নির্বাচনী প্রতীক থেকে তথ্য, অন্যত্র মজুত রাখেন Bharat Electronics Limited-এর ইঞ্জিনিয়াররা। এতে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কেন আসল তথ্য মুছে ফেলা হল? EVM-এর তথ্য যেন মোছা না হয়, নির্দেশ দেন। আগামী ১৭ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।