নয়াদিল্লি: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে এসেছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের। এবার সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও প্রশ্ন উঠল। সঠিক পদ্ধতিতে, যাচাই করে নিয়োগ না হলে, 'এই প্রক্রিয়া রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের মাধ্যম হতে পারে'। সিভিক ভলান্টিয়ার নিযুক্তির মাধ্যমে '' তাতে রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা চাইল দেশের শীর্ষ আদালত। দীপাবলির পর এই মামলার ফের শুনানি হবে। (Supreme Court)
হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তার প্রশ্নে মঙ্গলবার আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী করুণা নন্দী। রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা কমিটিতে সিনিয়র এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানান তিনি। এতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী আদালতে জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। (Civic Volunteer Recruitment)
কিন্তু চিকিৎসকদের সংগঠনের আইনজীবী নন্দী 'রাত্তিরের সাথী' প্রকল্পের উল্লেখ করেন। জানান, নিরাপত্তার নামে আরও দ্বিগুণ সংখ্যক নাগরিকদের নিয়োগ করা হচ্ছে। রাজ্য়ের তরফে আইনজীবী দ্বিবেদী জানান, ২০০৫ সালের প্রাইভেট সিকিওরিটি এজেন্সিস রেগুলেশন অ্যাক্টের আওতায় হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হচ্ছে, দেশের অন্য রাজ্যের মতোই। এ প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের উদাহরণ টানেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।
আদালতে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী জানান, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আগে থেকে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা ছিল। তার পরও পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করত সে, পুলিশের ব্যারাকেই থাকত। এতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী দ্বিবেদী জানান, ২০০৫ সালের ওই আইনের আওতায় কিন্তু সঞ্জয়কে নিয়োগ করা হয়নি। পুলিশের নিযুক্তির বিজ্ঞপ্তির নিরিখে সঞ্জয় চাকরি পান। এতে চিকিৎসকদের আইনজীবী জানান, একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়, যা নিয়ে আগে থেকেই মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে।
রাজ্যে কত সংখ্যক সিভিক ভলান্টিয়ার আছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। অভিযুক্তকেই বা কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ করা হয়, জানতে চান তিনি। তিনি বলেন, "পরবর্তী শুনানীতে এ নিয়ে তথ্য চাই, ১) সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের আইনি অধিকার কার, ২) সিভিক ভলান্টিয়ারের যোগ্যতা, ৩) কোন কোন প্রতিষ্ঠানে তাঁদের ডিউটি দেওয়া হয়, ৪) দৈনিক নাকি মাসিক টাকা পান তাঁরা, এর বাজেটই বা কোথা থেকে আসে।" হাসপাতালে, থানার মতো স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন না করতে, তদন্তপ্রক্রিয়ায় তাদের নিযুক্ত না করতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তাও হলফনামায় জানাতে বলেন তিনি।
এদিন আদালতে পঞ্চম স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় বেশ কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেছে CBI. কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা নিয়মিত নির্যাতিতার অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান সলিসিটর জেনারেল। আরও কিছু জায়গা থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা নিয়েও তদন্ত চলছে বলে জানান। রাজ্য জানায়, আজালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজ প্রায় ৯৮ শতাংশ শেষ হয়ে গিয়েছে। যে টুকু কাজ বাকি রয়েছে, তা শেষ হবে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে। যদিও রাজ্য সঠিক তথ্য দিচ্ছে না, কাজ শুরু হলেও, এখনও প্রায় কিছুই হয়নি বলে দাবি করেন আইনজীবী করুণা নন্দী। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে বলে জানান প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।