নয়াদিল্লি: নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েও সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার শিকার হলেন যোগগুরু রামদেব (Ramdev News)। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন নিয়ে আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ দেখিয়েছেন তাঁরা, তার জন্য  'পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের' সহ-প্রতিষ্ঠাতা রামদেব এবং সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বালাকৃষ্ণকে তীব্র ভর্ৎসনা করল দেশের শীর্ষ আদালত। বলা হয়েছে, শুধুমাত্র সুপ্রিম কোর্টই নয়, দেশের যে কোনও আদালতের নির্দেশকে সম্মান জানানো উচিত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রতি 'পতঞ্জলি'র আচরণ অত্যন্ত অবজ্ঞাপূর্ণ। (Patanjali Misleading Advertisement)


'পতঞ্জলি'র বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর এবং ভ্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রদানের অভিযোগ। সেই নিয়ে আগে একাধিক বার আদালতের তরফে সাবধান করা হলেও, সেকথায় কর্ণপাত করেনি তারা। গত বছর নভেম্বর মাসে সেই নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় Indian Medical Association (IMA). সংস্থার তৈরি ওষুধের বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্তিকর এবং ভ্রান্ত তথ্য দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল তাদের।


IMA জানায়, 'পতঞ্জলি'র বিজ্ঞাপনে অ্যলোপ্যাথি  চিকিৎসা এবং অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকদের নিয়ে কুৎসা করা হয়। আধুনিক অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে চিকিৎসকরা নিজেরাই মারা যাচ্ছেন যেখানে, তাঁরা রোগীদের সারিয়ে তুলবেন কী করে, প্রশ্ন তোলা হয়। আয়ুর্বেদিক ওষুধ সম্পর্কেও বিজ্ঞাপনে ভুল তথ্য তুলে ধরা হয় মানুষের কাছে। 


আরও পড়ুন: Vistara Crisis: দু’দিনে বাতিল প্রায় ৯০ বিমান, TATA মালিকানাধীন Vistara-র হলটা কী? এবার হস্তক্ষেপ কেন্দ্রের


ওই মামলার শুনানিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালত 'পতঞ্জলি'কে সব ধরনের বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন নিয়ে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়। পাশাপাশি, সব দেখেও কেন্দ্রীয় সরকার কেন চোখ বন্ধ করে রেখেছিল, প্রশ্ন তোলে আদালত। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি হিমা কোহলি এবং আহসানউল্লা আমানউল্লার বেঞ্চের সামনে এদিন নিঃশর্ত ক্ষমা চান রামদেব। কিন্তু বিচারপতি কোহলি বলেন, "আপনার ক্ষমাপ্রার্থনায় সন্তুষ্ট নই আমরা।  আমরাও দুঃখিত বলে আপনার ক্ষমা না গ্রহণ করতে পারি। মন থেকে ক্ষমা চাইছেন না আপনি। শুধু মুখের কথা বলছেন।"


এর পর রামদেবের আইনজীবী বলবীর সিংহ জানান, যোগগুরু এবং বালাকৃষ্ণ, ব্যক্তিগত ভাবে আদালতে চাইতে প্রস্তুত। আদালত যা নির্দেশ দেবে, তা মানতে রাজি তাঁরা। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, 'পতঞ্জলি' যে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে, তা দেশের আইনের পরিপন্থী জেনেও তাতে রাশ টানা হয়নি। রামদেবের উদ্দেশে আদালত বলে, "কড়া পদক্ষেপের জন্য তৈরি থাকুন।" আগামী ১০ এপ্রিল পরবর্তী শুনানিতে রামদেব এবং বালাকৃষ্ণকে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।