নয়াদিল্লি: খোলা করিডরে কাচের দেওয়াল বসিয়েছিলেন একজন। অন্য জন এসে তুলে দিলেন সেই দেওয়াল। এক বছরের মধ্যেই দু’-দু’বার পাল্টে গেল সুপ্রিম কোর্টের চেহারা। সেই নিয়ে এবার নয়া তথ্য সামনে এল। জানা গেল, শীর্ষ আদালতের করিডরে কাচের দেওয়াল বসাতে ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। সেই দেওয়াল সরাতে খরচ হয়েছে ৮ লক্ষ টাকা। তথ্য় জানার অধিকার আইনে আবেদন জানিয়ে এই খরচের হিসেব হাতে পেয়েছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। (Supreme Court)

২০২২ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর, দু’বছর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলান প্রাক্তন CJI ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সেই সময় আদালতের প্রথম পাঁচটি কক্ষের সামনে থাকা খোলা করিডরে কাচের দেওয়াল তোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের পরিবেশকে আরামদায়ক করে তুলতে, পরিকাঠামোগত আধুনিকীকরণের লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছিল সেই সময়। কাচের দেওয়াল থাকলে সেন্ট্রালাইজড এসি বসানোর কথাও উল্লেখ করা হয়। (Supreme Court News)

ওই কাচের দেওয়াল বসানোর প্রস্তাবে গোড়াতেই আপত্তি তোলে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন এবং সুপ্রিম কোর্ট অ্যাডভোকেটস-অন-রেকর্ড অ্যাসোসিয়েশন। কাচের দেওয়াল বসাতে গিয়ে করিডর আরও সরু হয়ে গিয়েছে, সেখানে চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কোনও রকম শলা-পরামর্শ করা হয়নি বলেও অভিযোগ তোলে তারা।

চন্দ্রচূড় অবসরগ্রহণ করলে  সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে তদানীন্তন CJI সঞ্জীব খন্নার কাছে আবেদন জমা দেয়। কাচের দেওয়ালে সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা ও ঐতিহ্য ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে জানানো হয়।মাত্র ছ’মাসের কার্যকালে CJI খন্না সেই সময় কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তবে চলতি বছরের মে মাসে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেই CJI বিআর গাভাই ওই কাচের দেওয়াল সরানোর কাজে হাত দেন। বিচারপতিদের সর্বসম্মতিতে জুন মাসে ওই কাচের দেওয়াল তুলে ফেলা হয়। 

সেই নিয়েই RTI আবেদন জানায় India Today. খরচের যে হিসেব হাতে পেয়েছে তারা, তাতে দেখা গিয়েছে, কাচের দেওয়াল বসাতে মোট ২ কোটি ৫৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ২৩০ টাকা খরচ হয়েছিল। সেই দেওয়াল তুলে ফেলতে খরচ হয় ৮ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭০০ টাকা। তবে CJI গাভাই একা নন, বিচারপতিদের সর্বসম্মতিতেই কাচের দেওয়াল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে বিচারবিভাগীয় পরিষেবার জন্যও অর্থ বরাদ্দ থাকে। সেই টাকাতেই গোটা কাজ হয়েছে।

তবে প্রাক্তন CJI চন্দ্রচূড়ের বসানো কাচের দেওয়ালই শুধু তুলে ফেলা হয়নি, গত কয়েক মাসে আরও একাধিক পরিবর্তন চোখে পড়েছে। প্রাক্তন CJI চন্দ্রচূড় সুপ্রিম কোর্টের লোগো পাল্টে দিয়েছিলেন। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত বদলে আবারও আগের লোগো ফিরিয়ে আনা হয়েছে।